জাতীয় ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার পাশাপাশি সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তিনি শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস–২০২৫’ উপলক্ষে প্রদত্ত এক বাণীতে এসব তথ্য জানান।
ড. ইউনূস বলেন, সীমান্ত এলাকায় চোরাচালান প্রতিরোধ, মাদক এবং নারী ও শিশু পাচার রোধে বিজিবি ‘সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে এবং জরুরি অবস্থায় জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় বাহিনীটির অবদান বিশেষভাবে প্রশংসার যোগ্য।
তিনি বলেন, জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের পর সীমান্ত এলাকায় উদ্ভূত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, উত্তেজনা এবং পুশইনের মতো পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিজিবি অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছে। এ প্রসঙ্গে বিজিবির সীমান্ত নিরাপত্তা কার্যক্রম ও প্রশাসনিক পদক্ষেপগুলো দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
বিজিবি দিবস উপলক্ষে ড. ইউনূস বাহিনীর সকল সদস্যকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ একটি গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারক। মহান মুক্তিযুদ্ধে বাহিনীর দুইজন বীরশ্রেষ্ঠসহ ১১৯ জন সদস্যের বীরত্বপূর্ণ অবদান এবং ৮১৭ জন শহীদের আত্মত্যাগ বিজিবির ইতিহাসকে উজ্জ্বল করেছে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের পর বিভিন্ন সময়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে জীবন উৎসর্গকারী সকল সদস্যের আত্মার শান্তি কামনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, বিজিবির সীমান্ত নিরাপত্তা কার্যক্রম শুধুমাত্র দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে না, বরং আন্তর্জাতিক সীমান্ত সম্পর্ক উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। সীমান্ত এলাকায় আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষিত বাহিনী মোতায়েনের মাধ্যমে চোরাচালান, মাদক পাচার ও অপরাধ প্রবণতা নিয়ন্ত্রণে রাখা হচ্ছে। এই কার্যক্রমের মাধ্যমে সীমান্তবর্তী এলাকার জনগণ নিরাপদ ও সুরক্ষিত পরিবেশে জীবন-জীবিকা পরিচালনা করতে পারছে।
তিনি সবশেষে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস–২০২৫’ উপলক্ষে আয়োজিত সকল কর্মসূচির সফলতা কামনা করেন। এ কর্মসূচির মধ্যে সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রম, প্রশিক্ষণ সেশন এবং বাহিনী অভ্যন্তরের বিভিন্ন স্বীকৃতি প্রদান অন্তর্ভুক্ত ছিল। ড. ইউনূসের বক্তব্যে বিজিবির পেশাদারিত্ব, ইতিহাস এবং দেশের কল্যাণে অবদান সমূহের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে।
বিজিবির কার্যক্রম দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি সীমান্তবর্তী এলাকায় আইনশৃঙ্খলা, মানবাধিকার ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এমনভাবে দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় অবদান রাখার কারণে বাহিনীটি স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে একটি স্বীকৃত ও সমাদৃত প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত।