1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
রবিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৫৮ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
হত্যাকারীর গ্রেপ্তারে এক সপ্তাহেও অক্ষমতার তীব্র নিন্দা ধীপ চন্দ্র দাস হত্যাকাণ্ড: ফ্লোর ম্যানেজারসহ গ্রেপ্তার ১০ ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল সংশোধন ঘোষণা: ভোট ১২ ফেব্রুয়ারি ১৪৪৭ হিজরি সনের পবিত্র রজব মাস শুরু, রমজানের প্রস্তুতির ক্ষণগণনা শুরু সৌদি আরবের তাবুক ও হাইল অঞ্চলে বিরল তুষারপাত, শীতকালীন আবহাওয়ায় ব্যতিক্রমী দৃশ্য ইরানি তেল পরিবহনের অভিযোগে আরও ২৯ জাহাজে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডে সঠিক বিচার নিশ্চিতের আহ্বান জাতিসংঘের ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করল ইরান তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির ১৭ বছরের কারাদণ্ড সন্ত্রাসী হামলায় নিহত শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে ক্রিকেটাঙ্গনে শোক ও প্রতিক্রিয়া

তোশাখানা দুর্নীতি মামলায় ইমরান খান ও বুশরা বিবির ১৭ বছরের কারাদণ্ড

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২০ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ২ বার দেখা হয়েছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং তার স্ত্রী বুশরা বিবিকে রাষ্ট্রীয় উপহার সংক্রান্ত প্রতারণার অভিযোগে দায়ের করা তোশাখানা মামলায় ১৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। একই সঙ্গে উভয়কে অর্থদণ্ড হিসেবে এক কোটি ৬৪ লাখ পাকিস্তানি রুপি করে জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শনিবার পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদের জবাবদিহিতা আদালতের বিশেষ বিচারক শাহরুখ আরজুমান্দ এই রায় ঘোষণা করেন। নিরাপত্তাজনিত কারণে আদালতের এজলাস রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে জানা গেছে, তোশাখানা সংক্রান্ত দুটি পৃথক মামলায় এই সাজা দেওয়া হয়েছে।

ইমরান খান ২০১৮ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০২২ সালের এপ্রিলে জাতীয় পরিষদে অনাস্থা ভোটে পরাজিত হয়ে ক্ষমতা হারানোর পর তার বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। এসব অভিযোগের ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালের আগস্টে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রথমে পাঞ্জাব প্রদেশের অ্যাটক কারাগারে রাখা হলেও পরে তাকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে বর্তমানে তিনি বন্দি রয়েছেন।

রায়ে আদালত উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকালে পাওয়া উপহার সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালা লঙ্ঘনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, অভিযুক্তরা তোশাখানার নিয়ম অনুযায়ী সব উপহার যথাযথভাবে জমা দেননি এবং সরকারি নির্ধারিত মূল্যের তুলনায় কম দামে উপহার কিনে নিয়ে সেগুলো বাইরে বিক্রি করেছেন, যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।

এর আগে তোশাখানা সংক্রান্ত আরেকটি মামলায় নিম্ন আদালত ইমরান খান ও বুশরা বিবিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছিল। তবে পরে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট সেই সাজা বাতিল করেন। সর্বশেষ রায়ে নতুন করে সাজা ঘোষণার ফলে তাদের বিরুদ্ধে আইনি জটিলতা আরও বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

পাকিস্তানে তোশাখানা ব্যবস্থা চালু হয় গত শতকের সত্তরের দশকে। এটি একটি সরকারি বিভাগ, যেখানে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও সরকারি কর্মকর্তারা বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধান এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত উপহার জমা রাখেন। প্রচলিত আইন অনুযায়ী, দায়িত্ব পালনকালে পাওয়া সব উপহার বাধ্যতামূলকভাবে তোশাখানায় জমা দিতে হয়। পরবর্তী সময়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সরকার নির্ধারিত মূল্যে সেসব উপহার কিনে নিতে পারেন। নির্ধারিত এই মূল্য সাধারণত বাজারমূল্যের তুলনায় কম হয়ে থাকে।

আইন অনুসারে, তোশাখানা থেকে বৈধভাবে কেনা উপহার পরবর্তীতে বিক্রি করা নিষিদ্ধ নয়। তবে পাকিস্তানে বিষয়টি নৈতিকতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্কের জন্ম দিয়ে আসছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের উপহার গ্রহণ ও ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাতের প্রশ্ন ওঠে।

ইমরান খানের বিরুদ্ধে তোশাখানা দুর্নীতি সংক্রান্ত বিতর্ক প্রথম প্রকাশ্যে আসে ২০২১ সালে। পরে ২০২২ সালের আগস্টে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে ইমরান খান বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান, সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মোট ৫৮টি মূল্যবান উপহার গ্রহণ করেন। এসব উপহারের একটি অংশ তিনি তোশাখানায় জমা দেননি এবং যেগুলো জমা দিয়েছেন, সেগুলোও সরকারি নির্ধারিত মূল্যের তুলনায় অনেক কম দামে কিনে নেন।

অভিযোগ অনুযায়ী, কেনা উপহারগুলোর একটি বড় অংশ তিনি পরবর্তীতে বাজারে বিক্রি করে দেন। এসব উপহারের মধ্যে একাধিক দামি হাতঘড়ি ছিল, যেগুলোর আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১৪ কোটি ২০ লাখ পাকিস্তানি রুপি বলে উল্লেখ করা হয়। তদন্তে এসব লেনদেনের সঙ্গে আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেন।

এই রায়ের ফলে পাকিস্তানের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দেওয়া এই সাজা দেশটির রাজনীতিতে ও আইনি প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। একই সঙ্গে ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় উপহার ব্যবস্থাপনা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার বিষয়ে নতুন করে আলোচনার সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com