জাতীয় ডেস্ক
ঢাকা সেনানিবাসের কেন্দ্রীয় মসজিদে তিন বাহিনী প্রধানের উপস্থিতিতে সুদানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে নিহত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয় সদস্যের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে। রোববার (২১ ডিসেম্বর) সকালে জানাজা শেষে তাদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নেওয়া হবে দাফনের জন্য।
জানাজা অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে প্রেস সচিব শফিকুল ইসলাম এবং রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি, পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা শহীদ সেনাদের প্রতি ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। একই সঙ্গে তাদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকেও গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
পরবর্তী কর্মসূচি অনুযায়ী, শহীদদের মরদেহ হেলিকপ্টারের মাধ্যমে তাদের নিজ নিজ জেলায় পাঠানো হবে, যেখানে ধর্মীয় এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় তাদের দাফন কার্য সম্পন্ন হবে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, গত ১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের ওপর ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ছয়জন সেনা নিহত হন এবং আরও নয়জন আহত হন। আহতদের চিকিৎসা কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে অবস্থিত আগা খান ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে আহতরা সকলেই আশঙ্কামুক্ত অবস্থায় রয়েছেন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করছে। এ ধরনের হামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাদের নিরাপত্তা ও কৌশলগত প্রস্তুতি আরও জোরদার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় দেশের নিরাপত্তা বাহিনী আন্তর্জাতিক মিশনে অংশগ্রহণরত শান্তিরক্ষীদের জীবন ও সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা পুনর্ব্যক্ত করেছে।
সুদানে এই ধরনের হামলা আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা মিশনের জন্য ঝুঁকি এবং চ্যালেঞ্জের প্রমাণ দেয়। বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা সাধারণত জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে শান্তি প্রতিষ্ঠা, মানবিক সহায়তা এবং সন্ত্রাস-নিরসনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে।
আইএসপিআর জানায়, নিহত সেনাদের পরিবারের পাশে থাকা, তাদের মর্যাদাপূর্ণ দাফন এবং রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রদানের মাধ্যমে দেশের পক্ষ থেকে যথাযথ কৃতজ্ঞতা জানানো হয়েছে। এই ঘটনা দেশের সামরিক বাহিনীর প্রস্তুতি, আত্মত্যাগ এবং আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের গুরুত্বকেও পুনরায় উজ্জ্বল করেছে।