1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০২:০১ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
ঢাকায় পৌঁছেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপে তারেক রহমান তারেক রহমানের সাথে দেশে ফিরেছে তার পছন্দের বিড়াল ‘জেবু’ গণসংবর্ধনার সমাবেশস্থলে রওনা দিয়েছেন তারেক রহমান ফুলের মালা পরিয়ে তারেক রহমানকে বরণ করেন শ্বাশুরি তারেক রহমান ১৭ বছর পর দেশে ফিরলেন তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: বিমানবন্দরে বুলেটপ্রুফ গাড়ি, তিন স্তরের নিরাপত্তা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরছেন তারেক রহমান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: ৫৫ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হিথরো বিমানবন্দরে পৌঁছেছেন তারেক রহমান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মানসিক সক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে

তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন: ৫৫ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৩ বার দেখা হয়েছে


জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সম্ভাব্য স্বদেশ প্রত্যাবর্তনকে ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “তারেক রহমানের দেশে ফেরা বাংলাদেশের বিগত ৫৫ বছরের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে।” তার বক্তব্যে দীর্ঘ ১৭ বছরের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন এবং সাম্প্রতিক সময়ের নিরাপত্তা ইস্যু উঠে আসে।

সালাহউদ্দিন আহমদ বিমানবন্দরের ভিভিআইপি গেটের সামনে সাংবাদিকদের বলেন, “তারেক রহমানকে একনজর দেখার জন্য দলের নেতাকর্মীসহ দেশবাসী অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। আজ যে ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে, তা দেশবাসীর পাশাপাশি সারা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করবে।” তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যে আন্দোলন চলেছে, ছাত্র-জনতার সাম্প্রতিক গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তার সফল পরিসমাপ্তি ঘটেছে। সেই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় তারেক রহমানের দেশে ফেরা গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।”

তারেক রহমানের দেশে ফেরার প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ২০০৭ সালের পর থেকে তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন। ২০০৭-০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর তিনি লন্ডনে চিকিৎসার জন্য যান এবং এরপর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন। বিএনপি ও সমমনা রাজনৈতিক দলগুলো বরাবরই দাবি করে আসছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারেক রহমানকে বিদেশে থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। দলীয় সূত্র মতে, দেশে ফেরার বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরে আলোচনায় থাকলেও, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এটি নতুন মাত্রা পেয়েছে।

বিএনপি নেতার বক্তব্যে উঠে আসে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা ইস্যুও। রাজধানীর মগবাজারে সাম্প্রতিক বোমা হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি বলেন, “দেশের ভেতরে ও বাইরে এখনও পতিত ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং তাদের সহযোগীরা সক্রিয় রয়েছে। তারা গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে এবং নির্বাচন বানচাল করতে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র করছে।” তিনি দাবি করেন, “যে কোনো অগণতান্ত্রিক ও সহিংস তৎপরতাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা হবে এবং দেশের অগ্রযাত্রা রুখে দেওয়ার যে কোনো চেষ্টা প্রতিহত করতে সম্মিলিত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

দেশের ৫৫ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনায় দেখা যায়, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতি নানা উত্থান-পতন, সামরিক শাসন, গণঅভ্যুত্থান, বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক সহিংসতার মধ্য দিয়ে এগিয়েছে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার পর থেকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তন, গণতান্ত্রিক কাঠামোর পুনর্গঠন, নির্বাচনকালীন সংকট এবং নাগরিক অধিকারের প্রশ্ন বারবার সামনে এসেছে। ১৯৭৫ সালের পর সামরিক শাসনের দীর্ঘ অধ্যায়, ১৯৯০-এর গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সফলতা, ১৯৯১ সালে সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং পরবর্তী দশকগুলোতে রাজনৈতিক মেরুকরণ—সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি একটি বহুমাত্রিক কাঠামো ধারণ করেছে। এই দীর্ঘ পথচলার মধ্যে রাজনৈতিক নেতাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন একাধিকবার আলোচনায় এসেছে, তবে তারেক রহমানের দীর্ঘ অনুপস্থিতি এবং প্রত্যাবর্তন সম্ভাবনা একে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমান দেশে ফিরলে তা কেবল একটি দলের অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠনের বিষয় হবে না, বরং দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক মেরুকরণ, ভবিষ্যৎ নেতৃত্বের কাঠামো এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে। দীর্ঘ অনুপস্থিতির কারণে তার নেতৃত্ব নিয়ে যেমন সমর্থকদের মধ্যে আগ্রহ রয়েছে, তেমনি রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে—এটি অনুমেয়। বিশেষত, ২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন রাজনৈতিক কৌশল, জোট রাজনীতি এবং জনসম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে নতুন সমীকরণ তৈরি করতে পারে।

বিএনপি নেতারা ইতোমধ্যেই বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তারেক রহমানকে স্বাগত জানাতে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের উপস্থিতি এবং সম্ভাব্য জনসমাগম থেকে বোঝা যায়, বিষয়টি দলের জন্য সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

তবে সাংবাদিকদের সামনে দেওয়া বক্তব্যে সালাহউদ্দিন আহমদ কোনও নির্দিষ্ট সময়, আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া বা সম্ভাব্য ফ্লাইটের তথ্য প্রকাশ করেননি। ফলে প্রত্যাবর্তনের আনুষ্ঠানিকতা, নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা এবং প্রশাসনিক প্রস্তুতি নিয়ে স্পষ্টতা এখনও অপেক্ষমাণ।

বিএনপি নেতার বক্তব্যের শেষাংশে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণে নাগরিক সহযোগিতার আহ্বান জানানো হয়। তিনি বলেন, “আধুনিক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে দেশবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন এবং বিএনপি সেই লক্ষ্যে কাজ করবে।”

সার্বিক বিশ্লেষণে বলা যায়, তারেক রহমানের সম্ভাব্য স্বদেশ প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করতে পারে। তবে এই প্রত্যাবর্তন আনুষ্ঠানিকভাবে কখন ঘটবে, প্রশাসনিক ও আইনি প্রক্রিয়া কীভাবে সম্পন্ন হবে এবং নিরাপত্তা প্রস্তুতি কেমন থাকবে—এসব বিষয়ে স্পষ্টতা আসার পরই পূর্ণাঙ্গ রাজনৈতিক প্রভাব মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com