নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর সদরঘাটে শুক্রবার একটি লঞ্চ দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত লঞ্চ পরিদর্শন শেষে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আহতদের চিকিৎসার জন্য ৫০ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। তিনি এই ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন।
উপদেষ্টা জানান, সব ধরনের পরিবহনের মধ্যে নদীপথ তুলনামূলকভাবে নিরাপদ হলেও এই ধরনের দুর্ঘটনা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তিনি উল্লেখ করেন, নিজেও নিয়মিত নদীপথে যাতায়াত করেন এবং লক্ষ্য করেছেন যে অনেক সময় রাতে লঞ্চ চলাচলের সময় যথাযথ আলো ব্যবহার করা হয় না।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে মন্ত্রণালয় একটি আট সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। একই সঙ্গে ঘটনার সঙ্গে জড়িত দুই লঞ্চের দায়িত্বপ্রাপ্তদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পরে প্রকৃত কারণ নিশ্চিতভাবে জানা যাবে।
এছাড়া উপদেষ্টা আরও জানান, রাতের কোনো কুয়াশার মধ্যে লঞ্চ চলাচল করতে পারবে না। লঞ্চ রাতের বেলা কোথাও দাঁড়ালে অবশ্যই লাইট ব্যবহার করতে হবে। বাল্কহেড লঞ্চ সকাল ৮টার আগে চলাচল করতে পারবে না। এসব নির্দেশনা অমান্য করলে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করা হবে।
ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, দুর্ঘটনা ঝড় বা তুফানের কারণে ঘটতে পারে, তবে এই ঘটনায় দু’টি লঞ্চের সংঘর্ষের প্রকৃতি দেখে মনে হচ্ছে চালক ঘুমিয়ে পড়েছেন অথবা অন্য কাউকে দিয়ে লঞ্চ চালানো হয়েছিল। তবে তদন্ত ছাড়া নিশ্চিতভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়।
তিনি আরও সতর্ক করেন, ভবিষ্যতে কোনো লঞ্চ চালক যদি সঠিকভাবে লঞ্চ পরিচালনা না করে, রাতে লাইট ব্যবহার না করে বা সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে, তাদের রুট পারমিট ও লাইসেন্স বাতিল করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ২টার দিকে চাঁদপুরের হাইমচর এলাকায় ‘এডভেঞ্চার-৯’ ও ‘এমভি জাকির সম্রাট-৩’ লঞ্চের সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। নিহতরা হলেন আ. গনি (৩৮), মো. সাজু (৪৫), মো. হানিফ (৬০) এবং মোসা. রিনা (৩৫), যারা সকলেই ভোলা জেলার বাসিন্দা।