নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধিস্থল এলাকায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরীফ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত করেছেন। জিয়ারত শেষে তিনি হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে রওনা হন তিনি।
দলীয় সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১১টার দিকে তারেক রহমান হাদির কবর জিয়ারতের জন্য সেখানে উপস্থিত হন। তিনি কিছু সময় নীরবে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় তার সঙ্গে বিএনপির শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। জিয়ারত শেষে হাদির পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান তারেক রহমান এবং হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিকের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত সময় কথা বলেন। তবে তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য বা বিবরণ জানানো হয়নি।
হাদি ছিলেন ইনকিলাব মঞ্চের একজন মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত। সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে তার মৃত্যু রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দেয়। তারেক রহমানের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎকে বিএনপির পক্ষ থেকে একটি মানবিক ও রাজনৈতিক সৌজন্য হিসেবে দেখা হচ্ছে বলে দলীয় নেতারা মনে করছেন।
কবর জিয়ারতের সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এবং যুগ্ম মহাসচিব হাবিবুন্নবী খান সোহল উপস্থিত ছিলেন। নেতারা হাদির আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করেন।
এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত থেকে তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানান। উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদ, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সাইমা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমেদ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সহ-সভাপতি সাদিক কায়েম। বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তারেক রহমানের উপস্থিতিকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, হাদির কবর জিয়ারত ও পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ বিএনপির বর্তমান রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেও বিবেচিত হতে পারে। এতে করে দলটি রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি ও দায়বদ্ধতার বার্তা দিতে চাচ্ছে। তবে এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি।
কবর জিয়ারত শেষে সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে তারেক রহমান নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে রওনা হন। জানা যায়, তিনি ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য সেখানে যান। এ পদক্ষেপকে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে, কারণ দলটি দীর্ঘদিন ধরে ভোটাধিকার ও নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আসছে।
সার্বিকভাবে, তারেক রহমানের এই কর্মসূচি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক—দুই ক্ষেত্রেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। কবর জিয়ারত, পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং পরবর্তী সময়ে ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ—এই ধারাবাহিক ঘটনাপ্রবাহ তার বর্তমান রাজনৈতিক সক্রিয়তার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।