জেলা প্রতিনিধি
ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ এলাকায় একটি মাদ্রাসায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উম্মাল কুরা ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষে বিস্ফোরণটি ঘটে। এ ঘটনায় নারী, শিশুসহ চারজন আহত হয়েছেন। বিস্ফোরণে মাদ্রাসার দুই কক্ষের দেয়াল উড়ে গিয়ে ভবনের ছাদ ও বিমে ফাটল দেখা দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে ককটেল, রাসায়নিক দ্রব্য এবং বোমা তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল আলম জানান, ঘটনাস্থলে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল কাজ করছে এবং এখনো অভিযান চলছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছে এবং প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনে ক্রাইম সিন দল ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল তদন্তে কাজ করছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য অনুযায়ী, গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে একটি বিকট শব্দ শোনা যায়। এর পরই তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, মাদ্রাসার একতলা ভবনের পশ্চিম পাশের দুটি কক্ষের দেয়াল পুরোপুরি ধসে পড়েছে। বিস্ফোরণের কারণে পাশের দুটি কক্ষেও ফাটল ধরেছে, তবে বড় ধরনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেনি। স্থানীয়রা জানান, মাদ্রাসার ৩০ থেকে ৩৫ শিক্ষার্থী সাধারণত সেখানে পড়াশোনা করত, তবে শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় তারা উপস্থিত ছিল না।
বিস্ফোরণে আহত হন মাদ্রাসার পরিচালক শেখ আল আমিন (৩২), তাঁর স্ত্রী আছিয়া বেগম (২৮), এবং তাঁদের দুই সন্তান উমায়েত (১০) ও আবদুল্লাহ (৭)। আহতদের প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান।
মাদ্রাসার পরিচালক আল আমিনের এক প্রতিবেশী জানান, গতকাল বিস্ফোরণের পর তাদের ভবনের কিছু অংশও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই ভবনের ভাড়াটিয়া পারভীন বেগম বলেন, “মুফতি হারুন তিন বছর ধরে তাঁর শ্যালক আল আমিন ও তাঁর পরিবারকে মাদ্রাসা পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তবে মাদ্রাসার আড়ালে কী কার্যক্রম চলছিল, তা আমি বুঝতে পারিনি। আজ ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পর পুলিশ মাদ্রাসার ভেতর থেকে কেমিক্যাল, ককটেল ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে।”
এখনো পর্যন্ত ঘটনার বিস্তারিত তদন্ত চলছে এবং পুলিশ বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল ও ক্রাইম সিন দলকে তদন্তে নিয়োজিত করেছে।