ক্রিকেট ডেস্ক
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) চলমান দ্বাদশ আসরে চারটি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে, যার মধ্যে চতুর্থ ম্যাচে ঘটল একটি নজিরবিহীন ঘটনা। এই ম্যাচে সিলেট টাইটান্সের বিপক্ষে ব্যাটিং করতে গিয়ে নোয়াখালী এক্সপ্রেসের পেসার মেহেদি হাসান রানা প্রথমবারের মতো বিপিএল ইতিহাসে হ্যাটট্রিকের খেতাব অর্জন করেছেন।
শনিবার সিলেটে অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রথম ইনিংসে নোয়াখালী দল ১৪৪ রানের লক্ষ্য সিলেট টাইটান্সের সামনে রেখে ইনিংস সমাপ্ত করে। রান তাড়ায় সিলেটের দল ভালোভাবে এগিয়ে চলছিল, প্রয়োজন ছিল ১৮ বলে ২৫ রান। তখনই ম্যাচের ১৮তম ওভারে ঘটনাটি ঘটে। বাঁহাতি পেসার মেহেদি হাসান রানা প্রথমে সিলেট অধিনায়ক মিরাজকে বোল্ড করেন। পরবর্তী দুটি উইকেট নেন নাসুম আহমেদ এবং খালেদ আহমেদকে।
মিরাজের উইকেটটি ছিল একটি বিতর্কিত সিদ্ধান্ত, যেখানে প্রথমে আম্পায়ার নো-বল দেওয়ার সিদ্ধান্তে দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন, তবে টিভি রিপ্লে দেখে সিদ্ধান্ত বদলে মিরাজকে আউট ঘোষণা করা হয়। এর পর, পরপর দুই বলে নাসুম আহমেদ এবং খালেদ আহমেদকে আউট করে মেহেদি হাসান রানা এই অসাধারণ কীর্তি অর্জন করেন। খালেদ আহমেদ রানার স্লো ডেলিভারি উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ক্যাচ দেন, যেখানে তার আশা ছিল ছক্কা হাঁকানোর, কিন্তু সেই চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
এ হ্যাটট্রিকের মাধ্যমে মেহেদি হাসান রানা বিপিএলে নবম বোলার হিসেবে এই কীর্তি গড়েন। যদিও, নাটকীয়তার মধ্যে শেষ পর্যন্ত সিলেট টাইটান্স ম্যাচটি ১ উইকেটে জিতে নেয়। দল হারলেও, ব্যক্তিগতভাবে রানা বিপিএল ইতিহাসে নিজের নাম সোনালী অক্ষরে লিখে ফেলেন। এই পেসার ৪ ওভারে ৩৪ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন।
বিপিএলে এখন পর্যন্ত আটজন বোলার হ্যাটট্রিকের সুযোগ পেয়েছেন, যার মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশি এবং তিনজন বিদেশি বোলার রয়েছেন। এই তালিকায় মেহেদি হাসান রানার আগে আরও আটটি হ্যাটট্রিকের নজির ছিল। ২০১২ সালে বিপিএলের যাত্রা শুরু হওয়ার পর থেকে একাধিকবার হ্যাটট্রিক দেখা গেছে। ২০১৯ সালে সর্বাধিক তিনটি হ্যাটট্রিক হয়েছিল, আর ২০২৪ আসরে দুটি হ্যাটট্রিক হয়।
এছাড়া, ২০১২ সালে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের বিপক্ষে প্রথম হ্যাটট্রিক করেন পাকিস্তানি পেসার মোহাম্মদ সামি। পরবর্তীতে ২০১৫, ২০১৯, ২০২২ এবং ২০২৪ আসরে আরও কয়েকজন ক্রিকেটার এই কীর্তি গড়েন। এই ধারাবাহিকতায়, মেহেদি হাসান রানার হ্যাটট্রিক বিপিএল ইতিহাসে নতুন একটি অধ্যায় যুক্ত করল।
এভাবে, ২০২৫ আসরের চতুর্থ ম্যাচে মেহেদি হাসান রানা এই অসাধারণ কীর্তি গড়লেও, শেষ পর্যন্ত সিলেট টাইটান্স দলের জয় নিশ্চিত করে এবং নোয়াখালীকে ১ উইকেটে পরাজিত করে।