রাজনীতি ডেস্ক
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) চেয়ারপারসন এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) ভোর ৬টায় ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে গুরুতর অসুস্থতার কারণে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তার প্রয়াণে রাজনৈতিক অঙ্গনসহ দেশজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও দেশের জনপ্রিয় এই নেতা সাধারণত ‘আপসহীন’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। অন্যায় ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে তার আপসহীন অবস্থান তাকে দেশের মানুষের মধ্যে একটি অনন্য গ্রহণযোগ্যতা এনে দিয়েছে। বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের মধ্যে তার অবস্থান এক বিশেষ মর্যাদাসম্পন্ন ছিল।
খালেদা জিয়ার নির্বাচনী ইতিহাসও তার রাজনৈতিক দৃঢ়তা প্রমাণ করে। তিনি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে লড়াই করা প্রতিটি আসনে জয়ী হয়েছেন এবং কোনো আসনে পরাজিত হননি। ১৯৯১ সালের পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বগুড়া-৭, ঢাকা-৫, ঢাকা-৯, ফেনী-১ ও চট্টগ্রাম-৮ আসনে প্রার্থী হন এবং সবগুলোতেই জয়ী হয়ে ফেনী-১ আসনটি ধরে রেখে বাকি চারটি আসন ত্যাগ করেন।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তিনি বগুড়া-৬, বগুড়া-৭, ফেনী-১, লক্ষ্মীপুর-২ ও চট্টগ্রাম-১ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সব আসনে জয়ী হয়ে শেষ পর্যন্ত ফেনী-১ আসনটি প্রতিনিধিত্ব করার সিদ্ধান্ত নেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে একইভাবে পাঁচটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করেন এবং বগুড়া-৬ আসনটি নিজের জন্য রাখেন। এছাড়াও, ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি যে তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন, সেগুলিতে তিনি জয়ী হন।
খালেদা জিয়ার দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারটি দেশের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত হয়। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নেতৃত্ব, রাজনৈতিক সংগ্রাম ও বিএনপির প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনায় তার অবদান বাংলাদেশের রাজনীতিতে স্থায়ী ছাপ রেখেছে।
তার প্রয়াণে দেশের রাজনৈতিক মহলে শোকের পাশাপাশি এক অমিট শূন্যতা সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, খালেদা জিয়ার অনন্য নেতৃত্ব ও আপসহীনতা আগামী প্রজন্মের রাজনীতিবিদদের জন্য শিক্ষণীয় উদাহরণ হয়ে থাকবে।