জাতীয় ডেস্ক
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, “সকল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাংলাদেশে থেকেছেন।” মঙ্গলবার রাতে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান। খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করতে গিয়ে গুলশান কার্যালয়ে রাখা শোক বইয়ে স্বাক্ষরও করেন তিনি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান, সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী, এবং প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
আসিফ নজরুল বলেন, “আজ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত হৃদয়বিদারক একটি দিন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী, গণতন্ত্রের অগ্রনায়ক বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুবরণ করেছেন। তিনি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য, গণতন্ত্রের উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। সকল প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, অসীম নির্যাতনের মুখোমুখি হয়ে তিনি বাংলাদেশে থেকেছেন। কখনো মাথা নত করেননি।”
তিনি আরও যোগ করেন, “আমি শোক বইয়ে স্বাক্ষর ও শোকগাথা লিখতে গিয়ে কিছু লিখতে পারিনি। শোকে ভেঙে পড়েছি। মনে হচ্ছে, আজ বাংলাদেশ এতিম হয়ে গেছে। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে। তবে সবচেয়ে সান্ত্বনার বিষয় হলো বাংলাদেশের মানুষ তাঁকে কতটা ভালোবাসে, সম্মান করে। উনি এটা দেখে যেতে পেরেছেন।”
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমান বলেন, “খালেদা জিয়া যে স্বাধীন, সার্বভৌম, গণতান্ত্রিক ও মানুষের অধিকারের বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমরা সকলের সম্মিলিত শক্তিতে সেটি গড়ে তুলতে চেষ্টা করব। আমরা সেটির দ্বারপ্রান্তে আছি।”
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “১৯৭২ থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সংগ্রামের ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র বেগম খালেদা জিয়া। তিনি ছিলেন সৌন্দর্য ও বেদনার এক বিরল সংমিশ্রণ। তিনি কেন সবার থেকে আলাদা, ৫ আগস্ট হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তাঁর বক্তব্য শুনলে বোঝা যায়।”
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ছয়টায় ইন্তেকাল করেন। তাঁর জানাজা আগামীকাল বুধবার বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজা ও সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাঁকে তাঁর স্বামী সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
খালেদা জিয়ার মৃত্যুকে ঘিরে রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। আইন উপদেষ্টা এবং অন্যান্য উপদেষ্টারা একযোগে মনে করিয়ে দেন, তাঁর অবদান বাংলাদেশের গণতন্ত্র ও রাজনীতিতে চিরস্মরণীয়।