কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল-রিসোর্টে ‘অনৈতিক কাজে নারী সরবরাহ ও বাড়ীতে জমজমাট আসর বসানোর’ অভিযোগে কক্সবাজার সদরে বেশ কিছু এবং চার নারীসহ পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
কক্সবাজার সদর থানার ওসি শেখ মুনীর-উল-গীয়াস জানান, শনিবার ( ১৪ আগস্ট) ভোর রাতে কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পাড়ায় এ অভিযান চালানো হয়।
আটককৃতরা হলো-কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর পাড়ার মোহাম্মদ আলমের ছেলে জমির হোসেন ওরফে রুবেল (৩০) ও ঝিলংজা ইউনিয়নের হাজী পাড়ার মোহাম্মদ সিরাজের মেয়ে ইয়াসমিন আক্তার (২৫), রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ এলাকার ছুরত আলমের মেয়ে সোনিয়া আক্তার (১৮), চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা এলাকার জাফর আলমের মেয়ে মিনা আক্তার এবং বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার রাজপিলা এলাকার চুইং মার্মার মেয়ে মিলি মার্মা।
এদেরমধ্যে আটক জামির হোসেন ওরফে রুবেল বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগ কক্সবাজার সদর উপজেলার চৌফলদন্ডী ইউনিয়ন শাখার সভাপতি।
পুলিশ জানিয়েছে, জামাল হোসেন সংঘবদ্ধ চক্র গড়ে তোলে বিভিন্ন এলাকা থেকে নানা কৌশলে নারীদের সংগ্রহ কক্সবাজারের আবাসিক হোটেল-রিসোর্টে সরবরাহ করে আসছে। এছাড়া তাদের নিয়ে নিজের বাড়ীতে মদ ও নারীদের জমজমাট আসর আয়োজন করতো। যে আসরে অংশ নিত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন।
ওসি মুনীর-উল-গীয়াস বলেন, শনিবার ভোর রাতে কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের উত্তর পাড়ায় জনৈক এক ব্যক্তির বাড়িতে অনৈতিক কাজে সরবরাহের জন্য কিছু সংখ্যক নারীদের জড়ো করা হয়েছে খবরে পুলিশের একটি দল অভিযান চালায়। এতে সন্দেহজনক বাড়িতে পুলিশ তল্লাশী চালিয়ে চার নারীসহ পাঁচজনকে আটক করেছে।
“এসময় বাড়িটি থেকে আটক জামাল হোসেন ওরফে রুবেলের নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে বেশ কিছু পর্ণোভিডিও এবং কনডম পাওয়া যায়।”
ওসি বলেন, “গত কিছুদিন আগে চৌফলদন্ডী বিট পুলিশ কার্যালয়ে খবর আসে স্থানীয় এক ব্যক্তির বাড়িতে বিভিন্ন এলাকা থেকে নারীদের সংগ্রহ করে অনৈতিক কাজ চালানো হচ্ছে। বাড়িটিতে প্রায় সময় ওইসব নারীদের নিয়ে মদের আসর বসত। যেখানে অংশ নিত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন। ”
“স্বীকারোক্তিতে আটক জামাল হোসেন জানিয়েছে, কৌশলে সংগ্রহ করা নারীকে তার বাড়ীতে আনার পর প্রথমে জামাল নিজেই শারীরিক সর্ম্পক করত। পরে এসব অশ্লীল দৃশ্য নিজের ব্যবহৃত মোবাইলে সে ধারণ করত। ”
মুনীর-উল-গীয়াস বলেন, “আটক জামালের সঙ্গে কক্সবাজার শহরের বেশ কয়েকটি আবাসিক হোটেলের লোকজন এ অনৈতিক কাজে জড়িত রয়েছে। এসব হোটেলে নারীদের নির্দিষ্ট অংকের টাকায় সে সরবরাহ করত। তার একটি অংশ পেত জামাল নিজেই। ”
ওসি জানান, আটক জামাল হোসেন নিজেকে বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে দাবি করেছে। পুলিশ অপরাধীর ক্ষেত্রে কোন রাজনৈতিক দলেও নেতা বা সদস্য তা বিবেচনায় নেয় না।
এ ঘটনায় শনিবার দুপুরে আটকদের বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফি ও মানবপাচার আইনে মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানান মুনীর-উল-গীয়াস।