যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে মস্তিষ্কখেকো বিরল অ্যামিবায় আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তবে তাঁরা মৃত ব্যক্তির পরিচয় জানাতে পারেননি।
সাউথওয়েস্ট ফ্লোরিডার শার্লট কাউন্টির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই ব্যক্তি সম্ভবত কলের পানি দিয়ে নাকের সাইনাস ধুয়ে ফেলার পর সংক্রমিত হয়েছিলেন। মস্তিষ্কখেকো অ্যামিবা নাক দিয়ে ঢুকে মস্তিষ্কে সংক্রমিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (সিডিসি) বলছে, সংক্রমণ প্রায় সব সময়ই মারাত্মক হয়ে থাকে।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরিডার স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছিল, একজন রোগী বিরল এই অ্যামিবার সংক্রমণ নিয়ে এসেছেন। সম্ভবত তাঁর কলের পানি দিয়ে সাইনাস ধুয়ে ফেলার অভ্যাস আছে। এ থেকেই তিনি সংক্রমিত হয়েছিলেন।
আর গতকাল বৃহস্পতিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখপাত্র জে উইলিয়ামস নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, ওই রোগী মারা গেছেন। তিনি বলেন, এই সংক্রমণ কীভাবে ঘটেছে, তা তদন্তে সরকারি একাধিক সংস্থার কর্মকর্তা কাজ করে যাচ্ছেন।
এ ধরনের অ্যামিবা সাধারণত সুইমিংপুল, হ্রদ ও পুকুরের পানিতে বাস করে। এটি মানুষের নাক দিয়ে ঢুকে গুরুতর সংক্রমণ ঘটাতে পারে। তবে এটি সাধারণত মুখ দিয়ে ঢুকলে নিরাপদ।
কারণ, পাকস্থলির অ্যাসিড এককোষী অণুজীবকে মেরে ফেলে। যারা সংক্রমিত হয়, তারা প্রাইমারি অ্যামেবিক মেনিনগোয়েনকেফালাইটিস নামে একটি রোগে আক্রান্ত হয়। এ রোগের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—মাথাব্যথা, জ্বর, বমি বমি ভাব, বমি, বিভ্রান্তি, শক্ত ঘাড়, ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা, খিঁচুনি অথবা হ্যালুসিনেশন।
সিডিসি বলছে, প্রতিবছর প্রায় তিনজন আমেরিকান এই রোগে সংক্রমিত হয়। প্রায়ই তাদের মারাত্মক পরিণতি হয়। ১৯৬২ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে এই রোগে সংক্রমিত ১৫৪ জনের মধ্যে মাত্র ৪ জন বেঁচে ছিলেন। সাধারণত শীতকালে এই সংক্রমণ ঘটে না।
কর্মকর্তারা সতর্ক করে বলেন, এ ধরনের সংক্রমণ এড়াতে কলের অপরিশোধিত পানি দিয়ে নাক পরিষ্কার করা উচিত নয়।
জীবাণুমুক্ত পানি দিয়ে তা ধোয়া যাবে। তবে কলের পানি অন্তত এক মিনিট সেদ্ধ করে তা ব্যবহারের আগে ঠান্ডা করে নিলে সমস্যা নেই। এ ছাড়া সুইমিংপুলে নেমে বা গোসল করার সময় নাকে পানি না দেওয়ার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।বিবিসি