1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
  3. jeradmin@deshmediabd.com : :
বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯ পূর্বাহ্ন

কাদের-চুন্নুকে ধুয়ে দিলেন পরাজিত প্রার্থীরা

রিপোর্টার
  • আপডেট : সোমবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২৪
  • ৬৫ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

নির্বাচনে ভরাডুবির জন্য দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদের এবং মহাসচিব মজিবুল হক চুন্নুকে সরাসরি দায়ী করেছেন দেশের বিভিন্ন আসনে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা জাতীয় পার্টির পরাজিত প্রার্থীরা। সঙ্গে চেয়ারম্যানের স্ত্রীকেও দায়ী করেছেন তারা। সমালোচনার মাধ্যমে এই নেতাদের তুলোধুনে করেছেন বিক্ষুব্ধরা। জিএম কাদের ও চুন্নুকে ‘বাটপার’ ও ‘প্রতারক’ বলেও গালি দেন কেউ কেউ।

রোববার (১৪ জানুয়ারি) রাজধানীর কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এই সভা আহ্বান করেন জাপার পরাজিত প্রার্থীরা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলের কো-চেয়ারম্যান ও ঢাকা-৪ আসনের নির্বাচনে পরাজিত সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা। সভায় নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৩০ জন প্রার্থী বক্তব্য দেন এবং এতে উপস্থিত ছিলেন ১২২ জন প্রার্থী।

দলটির বিক্ষুব্ধ নেতাদের দাবি, নির্বাচন উপলক্ষে সরকার জাতীয় পার্টিকে অনেক টাকা দিয়েছে। বেশি আসনে ছাড় দিতেও রাজি ছিল। কিন্তু নিজেদের ব্যর্থতার কারণে জাতীয় পার্টি সেটা আদায় করতে পারেনি। এর জন্য দলের মহাসচিব চুন্নুকে বেশি দায়ী করেন তারা।

জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য শফিকুল ইসলাম সেন্টু বলেন, ভোটের আগে ২৩ জন প্রার্থী আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তাদের আক্ষেপ, ক্ষোভ বা দুঃখ যে, আমরা নমিনেশন পেপার সাবমিট করে নির্বাচনী প্রচারের কাজে ব্যস্ত। ঢাকায় আসলাম মহাসচিব, চেয়ারম্যান হয়তো আমাদের কিছু দেবেন। এ কারণে আমরা ঢাকায় এসেছি। আমি তাদের বক্তব্য শুনেছি। ঢাকায় আমাকে ছাড়া তারা আর কাউকে পাননি। প্রার্থীরা বলেছেন, আমরা নির্বাচন থেকে সরে আসছি। আমাদের যা ছিল খরচ করেছি। আমাদের যদি কিছু সহযোগিতা না করেন, তাহলে আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

চেয়ারম্যান-মহাসচিবের সমালোচনা করে সেন্টু বলেন, আপনারা সমঝোতা করলেন। সরকার ২৬টা সিট তুলে দিয়েছে। সরকার কোনো কৃপণতা করেনি আমার জানা মতে। সরকার সব কিছু আপনাদের ভরপুর দিয়েছে, কোনো কিছু বাকি রাখেনি। অর্থ দিয়েছে, সিটও দিয়েছে। সিট আপনারা ২৬টা আনছেন, এটা আপনাদের ব্যর্থতা। সরকারের কোনো ব্যর্থতা নেই। সরকার আপনাদের ভরপুর দিয়েছে। আমরা জানি, বাবলা ভাই জানে, খোকা সাহেব জানে।

জিএম কাদেরের সমালোচনা করে তিনি বলেন, যখনই শেরীফা কাদেরের সিটটা কনফার্ম হয়নি, জিএম কাদের বললেন আমি ভোটে যাবো না। যেই তার স্ত্রীর (শেরীফা কাদের) সিটটা দিয়ে দিয়েছে, সে (জিএম কাদের) দৌড়ায়ে চলে গেছে।

শেরীফা কাদেরের মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলে জাপার নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহিনা সুলতানা লিমা বলেন, জাতীয় পার্টিতে শেরীফা কাদেরের ভূমিকা কী? নির্বাচনের আগে তাকে প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয়েছে। নির্বাচনে তার আসন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সমঝোতা করা হলো।

জিএম কাদেরকে উদ্দেশ্য করে সাবেক এমপি ও সিলেটের প্রার্থী ইয়াহইয়া চৌধুরী বলেন, আপনি গণতন্ত্র শিখিয়েছেন, আপনার মধ্যে গণতন্ত্র নেই। আপনি স্ত্রীর জন্য ফিরোজ, বাবলা, খোকা, পীর ফজলু, আতিক, ভাসানিসহ নয়টি সিট কোরবানি দিয়েছেন। সমাঝোতার আসনের জন্য চেয়ারম্যান নিজের স্ত্রী, নাতি আর মেয়ের ভাসুরের জন্য দৌড়াদৌড়ি করেছেন।

মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে প্রতারক ও বাটপার বলে দাবি করেন নোয়াখালী-৩ আসন থেকে নির্বাচন করা জাতীয় পার্টির প্রার্থী ফজলে এলাহী সোহাগ। তিনি বলেন, আমি নির্বাচনের সময় মহাসচিবকে শতাধিক বার ফোন দিয়েছি, কিন্তু তিনি ধরেননি। তিনি একজন প্রতারক ও বাটপার। তিনি সরকারের কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে আমাদের প্রার্থীদের না দিয়ে নিজের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন।

দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক এমপি লিয়াকত হোসেন খোকা বলেন, আমরা কোনো অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে এই সভা করছি না। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমরা জাতীয় পার্টিকে ঐক্যবদ্ধ ও শক্তিশালী করতে চাই। কিন্তু কিছু লোক চেয়ারম্যানকে কুক্ষিগত করে রেখেছে। যাদের কোনো নেতাকর্মী নেই। তারা নিজেদের অবস্থান শক্ত রাখতে পার্টির মধ্যে বিভেদ তৈরি করছে।

সিরাজগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী ফজলুল হক বলেন, আজকের এই মিটিংয়ের পর হয়ত শুনব দলে থেকে আমাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাতে কিছু যায় আসে না। তিনি বলেন, জাতীয় পার্টিতে কিছু নেতা আছে, যাদের মেম্বার হওয়ার যোগ্যতাও নেই। তারা আবার সংসদ সদস্য হতে চায়।

সিরাজগঞ্জ-৬ আসনের প্রার্থী মোক্তার হোসেন বলেন, নির্বাচনের আগে দল থেকে বলা হলো নির্বাচন করো। তুমি কিছু খরচ করো, আর বাকিটা দল দেবে। সে মোতাবেক আমি দোকান বিক্রি করে প্রথম কয়েক দিন প্রচারণা চালিয়েছি। পরে জিএম কাদের ও চুন্নুকে কল দিলে তারা আর রিসিভ করেননি। পরে ঢাকায় এসে দেখা করতে চাইলাম, তাও মানা করে দিয়েছে। কারণ, তাদের ভেতর ভয়, তারা যে টাকা আত্মসাৎ করেছে— কী জবাব দেবে?

প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঢাকা-৭ আসনের প্রার্থী হাজী সাইফুদ্দিন আহম্মেদ মিলন বলেন, জিএম কাদেরকে আমি স্বচ্ছ ও সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে জানতাম। এর আগেও তিনি যখন দলের মাঝে বিপদগ্রস্ত হয়েছিলেন তখনও আমি বলেছিলাম, কেউ আপনার পাশে না থাকলেও আমি থাকবো। আজকে জিএম কাদের যদি নির্বাচনে না যেতো তাহলে জাতির কাছে তিনি হিরো হতেন। আমাদের হতো আগামীর বাংলাদেশ। আমরা চাই না দলটি ক্ষতিগ্রস্ত হোক। আমি যাই বলেছি, দলের পক্ষে বলেছি। আজকে হয়ত আমাকে, কাজী ফিরোজ, বাবলাকে বহিষ্কার করতে পারবেন, সে ক্ষমতা আপনার (জিএম কাদের) আছে। কিন্তু আরেকটি মিলন, কাজী ফিরোজ বা বাবলা জন্ম দিতে পারবেন না

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com