শিক্ষা ডেস্ক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রকে সেলফি পরিবহনের বাসের হেলপার মারধর করার ঘটনায় আন্দোলন শুরু করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ডেইরি গেট সংলগ্ন এলাকায় বাস আটকে রাখেন শিক্ষার্থীরা। এই ঘটনায় আহত ছাত্রকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং বাস মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে তদন্তের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) রাত ১১টার দিকে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র সাফায়েতকে সেলফি পরিবহনের বাসের হেলপার দ্বারা মারধর করা হয়। সাফায়েত, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী, জানান যে, ঢাকাগামী বাসটি যাত্রী কম থাকার কারণে তার গন্তব্যে না যাওয়ার ঘোষণা দেয়। এরপর বাসের ড্রাইভার তার যাত্রীদের মাঝপথে নামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে সাফায়েত নামতে অস্বীকৃতি জানান। এই ঘটনার পর বাসের কর্মচারীরা তার ওপর শারীরিক আক্রমণ করে।
এরপর, ঘটনাটি সেখানেই থেমে না থেকে নবীনগরের দিকে অন্য একটি বাসের হেলপার এবং ড্রাইভারও যাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। এই হামলায় রেডিও কলোনির এক যাত্রী মাথায় আঘাত পান এবং তাকে এনাম মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য। সাফায়েতের সহপাঠীরা ঘটনাস্থলে এসে ৭টি বাস আটক করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক (ডেইরি গেট) পর্যন্ত যান।
এ বিষয়ে সেলফি পরিবহনের এক অফিস স্টাফ জানান, ‘‘শুনেছি আমাদের একটি বাস এক শিক্ষার্থীকে ধাক্কা দিয়েছে। এর পর শিক্ষার্থীরা কয়েকটি বাস আটক রেখেছে। আমরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত হেলপারকে শনাক্ত করার চেষ্টা করছি।’’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম এই ঘটনার নিন্দা জানান এবং বলেন, ‘‘ঘটনাটি অত্যন্ত ন্যক্কারজনক। বৃহস্পতিবার বাস মালিকপক্ষ আসবেন বলে জেনেছি। তারা এলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে বাস পরিবহনের বিষয়ে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে উত্তেজনা ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে গণপরিবহন ব্যবস্থার দুর্বলতা এবং পরিবহন শ্রমিকদের আক্রমণাত্মক আচরণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছাকাছি বাস স্টপেজে যাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধের জন্য শিক্ষার্থীরা নিয়মিত আন্দোলন করে থাকে।
এখন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা বাস আটকে রেখে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং পরিবহন মালিকপক্ষের উদ্যোগে কি ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি গুরুত্ব দিয়ে, প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস প্রদান করা হয়েছে।
এছাড়া, পরিবহন কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।