রাজধানী ডেস্ক
ঢাকা, ১৭ নভেম্বর: ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সোমবার (১৭ নভেম্বর) ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পুরানো বাসভবন বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। তবে, পুলিশ তাদের বাধা দিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ধাওয়া-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং কিছু সময়ের জন্য এলাকা উত্তাল হয়ে ওঠে।
এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা মূল ফটকের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে রওনা দেন। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটি বুলডোজার দিয়ে ভেঙে ফেলার বিরোধিতা করছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় প্রবেশমুখে পৌঁছালে পুলিশ তাদের থামিয়ে দেয়। পুলিশের বাধার মুখে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে ধাওয়া দেয় এবং এই সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ পাল্টা ধাওয়া দিয়ে ছাত্র-জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পুলিশি উপস্থিতি বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে যায়। এক্সকাভেটর নিয়ে বিক্ষোভকারীরা বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছানোর চেষ্টা করলে, পুলিশ ও সেনাবাহিনী তাদেরকে ঠেকানোর জন্য তৎপর হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি আরও গরম হয়ে উঠলে, ছাত্র-জনতা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। সেনাবাহিনীও সতর্ক অবস্থানে থেকে নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা চালায়।
এই ঘটনায়, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার কারণে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পুরো এলাকা ঘিরে ফেলে এবং সেনাবাহিনীর অবস্থান আরও কঠোর হয়ে ওঠে। শিক্ষার্থীরা এবং তাদের সমর্থকরা আওয়ামী লীগ বিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে, যার মধ্যে ছিল “মুজিববাদের আস্তানা এই বাংলায় হবে না”, “৩২ নম্বর বাড়িটি ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও” ইত্যাদি।
এদিকে, বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতার এই আন্দোলন পূর্ববর্তী কিছু সময়ে ঘটে যাওয়া প্রতিবাদ আন্দোলনের প্রতিফলন ছিল, যেখানে তারা জুলাই মাসে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ির কিছু অংশ বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেয়। আন্দোলনকারীরা দাবি করেন, শেখ মুজিবুর রহমানের বাসভবনটি একটি প্রতীকী স্থান হয়ে উঠেছে, যা তারা মেনে নিতে রাজি নন।
প্রসঙ্গত, আজ (১৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে গত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণা করতে যাচ্ছে। এই রায়ের প্রেক্ষাপটে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে উত্তেজনা আরও তীব্র হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ ঘটনার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এলাকা পরিদর্শন করে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।