শিক্ষা ডেস্ক
রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজ নিয়ে গঠিত প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’-এর খসড়া অধ্যাদেশ নিয়ে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় অংশীজনরা সাত কলেজের দীর্ঘদিনের একাডেমিক ঐতিহ্য, স্বাতন্ত্র্য ও সুনাম বজায় রাখার আহ্বান জানান এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন, প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও শিক্ষার্থীদের সেবার মান বাড়াতে সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করেন।
মতবিনিময় সভাটি সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সি আর আবরার।
ঢাকা কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মীর সরফত আলী সপু সভায় বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন হলে তা সংশ্লিষ্টদের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা সাত কলেজের বিরোধী নই, বরং তাদের এগিয়ে যাওয়ার পক্ষের। তবে ঢাকা কলেজসহ ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোর সুনাম রক্ষা আমাদের দায়িত্ব।” তিনি আরও বলেন, খসড়া অধ্যাদেশে এসব কলেজের স্বতন্ত্র মর্যাদা বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
হেলেন জেরিন খান, ইডেন কলেজ অ্যালামনাই নেত্রী, বলেন, “প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো ও ফ্যাকালটি বিভাজন সম্পর্কে অংশীজনদের পরিষ্কার ধারণা দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে মেয়েদের ক্যাম্পাসের ক্ষেত্রে এটি কীভাবে কার্যকর হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রয়োজন।” তিনি জানান, অংশগ্রহণকারী অধিকাংশ প্রতিনিধি ফ্যাকালটিভিত্তিক মডেলের বাইরে বিকল্প কাঠামোর প্রস্তাব করেছেন।
এদিকে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা সভায় অংশগ্রহণকারীদের আশ্বস্ত করে বলেন, “২০ নভেম্বর পর্যন্ত মতামত গ্রহণ প্রক্রিয়া খোলা থাকবে, এবং এই সময়ের মধ্যে যে কেউ লিখিত মতামত পাঠাতে পারবেন।” তারা জানান, সভায় অংশগ্রহণকারীরা এই প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়কে সাত কলেজের একাডেমিক চ্যালেঞ্জ ও প্রশাসনিক জটিলতা সমাধানের সুযোগ হিসেবে দেখতে আগ্রহী।
অংশীজনরা আরও উল্লেখ করেন, যদি সঠিক কাঠামো এবং বাস্তবসম্মত নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়, তবে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হবে। তারা মন্ত্রণালয়কে শিক্ষা অভিজ্ঞতা, মান উন্নয়ন এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতার বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার পরামর্শ দেন।
এছাড়া, তারা জানান যে ঐতিহ্যবাহী কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য ও ইতিহাস রক্ষা করে নতুন কাঠামো দাঁড় করানো হলে, তা দেশব্যাপী উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ মার্চ সরকার রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে পৃথক করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ নামে একটি নতুন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দেয়। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) প্রস্তাবিত নামটি নির্ধারণ করে। সাত কলেজের মধ্যে রয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ।