শিক্ষা ডেস্ক
ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকার প্রশাসনিক ভবনের সামনে জড়ো হয়ে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির প্রস্তাবিত স্কুলিং কাঠামোতে কলেজটিকে যুক্ত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মিছিল করেন। শিক্ষার্থীরা পরে ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির অন্তর্বর্তী প্রশাসক ও ঢাকা কলেজের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
বিক্ষোভকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড এবং ব্যানার প্রদর্শন করেন, যাতে লেখা ছিল—‘স্কুলিংয়ের ঠিকানা, ঢাকা কলেজ হবে না’, ‘ঢাকা কলেজের আঙিনায় স্কুলিং-এর ঠাঁই নাই’, ‘ইউজিসির কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’। প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী এক ঘণ্টা ধরে এ বিক্ষোভে অংশ নেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ঢাকা কলেজের নিজস্ব ইতিহাস, পরিচিতি এবং শিক্ষার পরিবেশ বহুদিনের অভিজ্ঞতায় গড়ে উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর কার্যক্রম পরিচালিত এই প্রতিষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট নতুন স্কুলিং কাঠামো যুক্ত হলে কলেজের স্বকীয়তা নষ্ট হবে। তারা আরও বলেন, এ প্রস্তাব শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণ ছাড়াই করা হচ্ছে।
শামিম রেজা নামের এক শিক্ষার্থী জানান, নতুন কাঠামো চালু হলে কলেজের অধীনে থাকা ল্যাবরেটরি, ক্লাসরুম ও অন্যান্য সুবিধার ব্যবহার নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হবে। এতে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার মানও প্রভাবিত হতে পারে। শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন, ঢাকা কলেজ একটি সরকারি ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান হওয়ায় এখানে স্কুলিং কাঠামো বসানো অযৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত নয়।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ঢাকা কলেজের প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনার আগে বাইরের কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। প্রস্তাবটি দ্রুত বাতিল না হলে তারা আরও বড় কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। এর আগে, ২৩ নভেম্বরও একই দাবিতে অধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছিলেন উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীরা।
সরকার ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিলসহ রাজধানীর সাতটি সরকারি কলেজকে একীভূত করে ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে নতুন একটি স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের ১২ নভেম্বরের বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ব্যক্তিগত ধারণা, অসম্পূর্ণ তথ্য বা গুজবের ভিত্তিতে বিভ্রান্তি বা পারস্পরিক দ্বন্দ্ব সৃষ্টি না করতে সবাইকে দায়িত্বশীল আচরণের আহ্বান জানানো হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের মূল্যবান শিক্ষা জীবন এবং সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রম যাতে কোনোভাবে ব্যাহত না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্যও সচেতন থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।