নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর দ্রুতগতির গণপরিবহন মেট্রোরেলে র্যাপিড পাস এবং এমআরটি পাসের জন্য অনলাইনে রিচার্জ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। এখন থেকে পাসধারীরা যেকোনো সময়, যেকোনো স্থান থেকে সহজে তাদের পাসে ব্যালেন্স যোগ করতে পারবেন। মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) সকালেই মেট্রোরেলের আগারগাঁও স্টেশনে এই প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে নিয়োজিত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন।
ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটির (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার বলেন, অনলাইন রিচার্জ ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে প্রত্যাশিত ছিল। এটি মেট্রোরেল ব্যবস্থাকে আরও আধুনিক, সহজ, নিরাপদ এবং সময়োপযোগী করবে। বর্তমানে মেট্রোরেলের ১৬টি স্টেশনে প্রতিটি স্টেশনে দুটি করে মেশিন বসানো হয়েছে। ব্যবহারকারীরা বাসা থেকে বা স্টেশনের বাইরে থেকেও অনলাইনে রিচার্জ করতে পারবেন এবং মেশিনে ট্যাপ করার পর তা কার্যকর হবে।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নিখিল কুমার দাস বলেন, মন্ত্রণালয়ের কাজ হলো নীতি সমর্থন প্রদান করা। ডিএমটিসিএল দেশের যোগাযোগ খাতে যুগান্তকারী পরিবর্তন আনছে, যা ব্যবহারকারীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা দেবে।
অনলাইন রিচার্জের প্রক্রিয়ায় ব্যবহারকারীকে প্রথমে [www.rapidpass.com.bd](http://www.rapidpass.com.bd) ওয়েবসাইট বা অ্যাপে নিবন্ধন করতে হবে এবং প্রয়োজনে তার র্যাপিড পাস কার্ড রেজিস্টার করতে হবে। যেকোনো বৈধ পেমেন্ট মাধ্যম ব্যবহার করে অনলাইনে রিচার্জ করা সম্ভব। তবে রিচার্জটি মেশিনে (এভিএম) ট্যাপ করার আগ পর্যন্ত “Pending/অপেক্ষমাণ” অবস্থায় থাকবে। এভিএমে ট্যাপ করার পর ব্যালেন্স আপডেট হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে হবে। সফল রিচার্জের পর ব্যবহারকারীর নিবন্ধিত মোবাইলে এসএমএস পাঠানো হবে। একবারে সর্বনিম্ন ১০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত রিচার্জ করা যাবে এবং পূর্ববর্তী পেন্ডিং রিচার্জ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নতুন রিচার্জ করা যাবে না। ব্ল্যাকলিস্টেড, রিফান্ডেড বা অবৈধ কার্ডের ক্ষেত্রে রিচার্জ সম্ভব হবে না। ব্যবহারকারী তার রিচার্জ হিস্ট্রি অ্যাপ বা ওয়েবপোর্টালের মাধ্যমে দেখতে পারবেন।
রিচার্জ বাতিলের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারী চাইলে এভিএমে ট্যাপ করার আগে ৭ দিনের মধ্যে রিফান্ডের অনুরোধ করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য হবে। অনলাইনে রিচার্জ করা হলেও, যদি ব্ল্যাকলিস্টেড কার্ডের কারণে ব্যালেন্স এভিএমে ট্যাপ না করার পর্যন্ত আপডেট না হয়, তখনও ব্যবহারকারী রিফান্ড চাইতে পারবেন এবং একই হারে ৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ কেটে নেওয়া হবে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ডিএমটিসিএলের পরিচালক (প্রশাসন) এ কে এম খায়রুল আলম, বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মো. শরাফত উল্লাহ খান, বিআরটিসির চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ মোল্লা এবং এসএসএল কমার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
নতুন অনলাইন রিচার্জ ব্যবস্থা মেট্রোরেল ব্যবহারকারীদের জন্য ভ্রমণ প্রক্রিয়াকে আরও দ্রুত, নিরাপদ ও সুবিধাজনক করবে, পাশাপাশি লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর ঝামেলা এবং সময় অপচয় কমাবে। এটি নগর পরিবহন ব্যবস্থায় ডিজিটালাইজেশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে ধরা হচ্ছে।