জাতীয় ডেস্ক
২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের শিক্ষার্থীদের মূল নম্বরপত্র বিতরণ আজ বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে। ১০ ডিসেম্বর থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী বিভিন্ন জেলা ও মহানগরের শিক্ষার্থীরা বোর্ডের সনদ শাখা থেকে নম্বরপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে জানানো হয়েছে, উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের নম্বরপত্র সংগ্রহ কার্যক্রম সকাল ১০টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলবে। এই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের প্রধান কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি সনদ শাখার ৪ নম্বর ভবনের পঞ্চম তলা থেকে নম্বরপত্র গ্রহণ করবেন। প্রতি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিকে প্রয়োজনীয় অনুমোদনপত্রসহ তিনটি নমুনা স্বাক্ষর সত্যায়িত করে আনতে বলা হয়েছে।
অফিস আদেশে জেলা–ওয়ারী যে সময়সূচি নির্ধারণ করা হয়েছে তা অনুযায়ী প্রথম দিন ১০ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল ও ঢাকা জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের নম্বরপত্র বিতরণ করা হবে। দ্বিতীয় দিন ১১ ডিসেম্বর নরসিংদী ও ফরিদপুর জেলার প্রতিষ্ঠানগুলোকে মূল নম্বরপত্র সংগ্রহ করতে হবে। এরপর ১৪ ডিসেম্বর মানিকগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জ, ১৫ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ, ১৭ ডিসেম্বর মাদারীপুর ও শরীয়তপুর, ১৮ ডিসেম্বর রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ জেলার নম্বরপত্র প্রদান করা হবে। ২১ ডিসেম্বর গাজীপুর জেলার প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে। সবশেষে ২২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নম্বরপত্র বিতরণ করা হবে।
এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের পরবর্তী একাডেমিক কার্যক্রম, যেমন বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আবেদন এবং সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাবৃত্তিসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে নম্বরপত্র একটি গুরুত্বপূর্ণ দাপ্তরিক দলিল হিসেবে বিবেচিত। নম্বরপত্রে বিষয়ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বর, জিপিএ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য অন্তর্ভুক্ত থাকে, যা পরবর্তী শিক্ষাজীবনে নথিপত্র যাচাইয়ের ক্ষেত্রে অপরিহার্য। সেজন্য বোর্ড নির্ধারিত সময়সূচি মেনে যথাসময়ে নম্বরপত্র সংগ্রহের জন্য সংশ্লিষ্টদের বিশেষভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। নম্বরপত্র বিতরণের এই প্রক্রিয়া সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে বোর্ড সাধারণত জেলা–ওয়ারী আলাদা তারিখ নির্ধারণ করে, যাতে ভিড় কম হয় এবং সেবা প্রদান নির্বিঘ্ন থাকে। অফিস আদেশে উল্লেখিত সময়সীমা অনুসরণ না করলে প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের পুনরায় নির্ধারিত তারিখের জন্য অপেক্ষা করতে হতে পারে। তাই বোর্ড নির্দেশিত দিনে প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ উপস্থিত থাকার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানপ্রধান বা মনোনীত প্রতিনিধিদের ক্ষেত্রে প্রাধিকারপত্রের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কোড নম্বর, উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ও বিভাগভিত্তিক তালিকা জমা দিতে হবে। নথিপত্রে কোনো অসংগতি পাওয়া গেলে নম্বরপত্র হস্তান্তর বিলম্ব হতে পারে বলে বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। এ কারণে প্রতিনিধি মনোনয়নের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে অভিজ্ঞ এবং দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে মূল নম্বরপত্র বিতরণ করা হয়। নম্বরপত্র বিলম্বিত হলে শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা কার্যক্রমে জটিলতা তৈরি হতে পারে। বিশেষ করে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আবেদন জমাদানের ক্ষেত্রে অনেক সময় মূল নম্বরপত্র জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হয়। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নম্বরপত্র সংগ্রহ নিশ্চিত করা শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই জরুরি।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয় ও অনার্স পর্যায়ের ভর্তি পরীক্ষার সময়সূচি সাধারণত বছরের শেষ প্রান্তিক থেকেই শুরু হয়। এ কারণে নম্বরপত্র দ্রুত সংগ্রহ করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর নথিপত্র যাচাই প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং ভর্তি–সংক্রান্ত প্রস্তুতি সময়মতো সম্পন্ন করা যায়। সরকারি চাকরির বিভিন্ন প্রাথমিক আবেদনেও নম্বরপত্র প্রয়োজন হতে পারে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানিয়েছে, নম্বরপত্র বিতরণ প্রক্রিয়া শেষে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি নির্ধারিত তারিখে নম্বরপত্র সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে বোর্ডের সনদ শাখায় আবেদন করে পরে নির্ধারিত তারিখে নম্বরপত্র পাওয়া যাবে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে নম্বরপত্র না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের আবেদন প্রক্রিয়া ব্যাহত হতে পারে।
শিক্ষা বোর্ড নম্বরপত্র গ্রহণের ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর সহযোগিতা কামনা করেছে এবং নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে প্রয়োজনীয় নথিসহ উপস্থিত হয়ে নম্বরপত্র সংগ্রহের অনুরোধ জানিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম নির্বিঘ্ন রাখতে বোর্ডের এই পদক্ষেপকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।