জাতীয় ডেস্ক
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর জাতীয় সংসদ দক্ষিণ প্লাজায় প্রখ্যাত নেতা ও সমাজকর্মী শরিফ ওসমান হাদির জানাজা সম্পন্ন হয়। জানাজায় দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এতে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা লাখের ঘরে পৌঁছেছে, যা হাদির প্রতি দেশের মানুষের গভীর শ্রদ্ধা ও সৃষ্ট অবদানকে প্রমাণ করছে।
জানাজার আয়োজনের সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। তিনি ফেসবুকে জানাজার পর মন্তব্য করেন, “প্রিয় সহযোদ্ধা হাদি ভাইয়ের কণ্ঠস্বর ছড়িয়ে পড়েছে ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে, আপামর জনসাধারণের মাঝে। ওসমান হাদির জানাজায় লাখো মানুষের এই সমাগম বার্তা দিচ্ছে যে, আমাদের এখনও দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়া বাকি।”
জানাজার আগে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দ হাদির স্মরণে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। তারা বলেন, আজকে এখানে হাজির হয়েছে বিশাল জনগণ, যা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢেউয়ের মত প্রবাহিত হচ্ছে। দেশের বাইরে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও হাদির অবদান ও জীবনের কথা জানতে আগ্রহী। প্রধান উপদেষ্টা আরও যোগ করেন, “প্রিয় ওসমান হাদি, তোমাকে আমরা বিদায় দিতে আসি নাই। তুমি আমাদের হৃদয়ের ভেতরে আছো এবং বাংলাদেশ যতদিন আছে, তুমি সব বাংলাদেশির বুকের মধ্যে থাকবে।”
শরিফ ওসমান হাদির জীবন ও কর্মক্ষেত্রে বাংলাদেশের সমাজ ও রাজনীতিতে যে অবদান রেখেছেন তা বহু বছর ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কর্মসূচি, জনগণকে সচেতন করার উদ্যোগ এবং দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য পরিচিত ছিলেন। তার নেতৃত্বে স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছিল।
জানাজার আয়োজনের সময় নিরাপত্তা ও জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। লাখো মানুষের উপস্থিতি সত্ত্বেও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয় এবং সুষ্ঠু পরিবেশে জানাজা সম্পন্ন হয়।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, এ ধরনের বৃহৎ সমাবেশ দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক ঐক্যবোধকে আরও দৃঢ় করতে পারে। হাদির প্রতি এই গণসম্মান ভবিষ্যতে দেশের সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলনে তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। এছাড়া, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তার কর্ম ও আদর্শ অনুসরণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
শরিফ ওসমান হাদির জানাজা ও শ্রদ্ধা নিবেদন শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির প্রতি সম্মান প্রদর্শন নয়, বরং এটি বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে ঐক্য, সম্মান ও সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রতিফলন হিসেবে দেখা যাচ্ছে। তার জীবনের নানা অর্জন ও অবদানের আলোকে আগামী প্রজন্মের জন্য নৈতিক ও সামাজিক শিক্ষা হিসাবে এই সমাবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে চিহ্নিত হবে।
প্রধান উপদেষ্টা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সাধারণ মানুষ ও দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মিলিত হয়ে এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হাদির স্মৃতিকে চিরস্মরণীয় করে রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। এ অনুষ্ঠান প্রমাণ করছে, বাংলাদেশের মানুষ তাদের নেতাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক মূল্যবোধে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসী।