জাতীয় ডেস্ক
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি সমাহিত করা হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের পাশে হাদির মরদেহ দাফন করা হয়।
এর আগে দুপুর ২টা ৩৩ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় সারা দেশ থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার হাজারো মানুষ উপস্থিত ছিলেন। মরদেহ বহনকারী গাড়ি জানাজা শেষে বিকেল ৩টার দিকে ঢাবির কেন্দ্রীয় মসজিদ এলাকায় পৌঁছে। জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। পুরো এলাকায় শোকের ছায়া বিরাজ করে।
হাদিকে কবরস্থ করার সময় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ মাটির সঙ্গে মিলিত হয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। আব্দুল্লাহ কবরের পাশে বসে দীর্ঘক্ষণ কান্নায় ভেঙে পড়েন। উপস্থিতি নিশ্চিত করে জানা যায়, মাটি দেওয়ার সময়ে তিনি আবেগের জেরে কথা বলতে পারেননি।
শরিফ ওসমান হাদির রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছিল। তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র হিসেবে রাষ্ট্র ও সমাজের নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় সংসদ এলাকার প্রশাসন জানায়, জানাজা ও সমাহিতকরণের সময় সুষ্ঠু শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন থেকে শোকসন্তপ্ত মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
হাদির প্রয়াণের কারণে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার সমাহিতকরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তিরা জানান, হাদির কর্মজীবন ও ন্যায্য আন্দোলন নতুন প্রজন্মের জন্য প্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করবে।
সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করছেন, হাদির সমাধিস্থল জাতীয় কবির পাশে রাখার সিদ্ধান্ত তার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অবদানের স্বীকৃতি হিসেবেও বিবেচিত হবে। তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দীর্ঘসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন এবং তার অনুপস্থিতি স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠনসহ সমাজের বিভিন্ন স্তরে শূন্যতার সৃষ্টি করবে।
হাদির সমাহিতকরণের অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সাধারণ নাগরিক ও ছাত্র সমাজ মিলিত হয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অনুষ্ঠান পরিচালনাকারী দল জানিয়েছে, হাদির কর্মজীবন ও সামাজিক অবদান স্মরণ করে নিয়মিত সভা ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে, যাতে নতুন প্রজন্ম তার আদর্শ ও নীতি অনুপ্রাণিত হয়।
শরিফ ওসমান হাদির দাফন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে শোকের পাশাপাশি তার অবদান এবং প্রেরণাদায়ী কর্মজীবন স্মরণ করা হচ্ছে।