জাতীয় ডেস্ক
জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেছেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধা এবং ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান হাদি যে সাংস্কৃতিক লড়াই শুরু করেছিলেন, তা সম্পূর্ণ করার প্রতিশ্রুতি দেশের নাগরিকদের পক্ষ থেকে রক্ষা করা হবে। তিনি শনিবার (২০ ডিসেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় শহীদ শরিফ ওসমান হাদির জানাজা নামাজে অংশগ্রহণকালে এ কথা জানান।
আখতার হোসেন বলেন, “আল্লাহ শহীদ শরিফ ওসমান হাদি ভাইকে কবুল করেছেন। তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য নিবেদিত ছিলেন। আমাদের লক্ষ্য হলো দেশকে আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সুরক্ষিত রাখা এবং বিদেশি আগ্রাসন, বিশেষ করে ভারতীয় আগ্রাসন থেকে মুক্ত রাখা। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বজায় থাকে এবং ওসমান হাদির শুরু করা সাংস্কৃতিক লড়াই সম্পূর্ণ হয়।”
তিনি আরও জানান, “শহীদ আবরার ফাহাদ, শহীদ আবু সাঈদসহ জুলাই মাসে শহীদ হওয়া অন্যান্য সকলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি। তারা যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই বাংলাদেশের জন্য আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে। আমরা আশা করি, দেশের মানুষ দল-মত নির্বিশেষে একত্রিত হয়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের আদর্শ ধারণ করে বাংলাদেশকে রক্ষা করবে।”
জানাজা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং তাদের পরিবারের জন্য দোয়া করেন। আখতার হোসেনের ভাষণে উঠে এসেছে, দেশের যুবসমাজ এবং সাধারণ নাগরিকরা কিভাবে শহীদ শরিফ ওসমান হাদির শুরু করা সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মূল্যবোধ এবং গণতান্ত্রিক আদর্শকে ধরে রাখতে পারে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে বিবেচিত, যেখানে যুবসমাজ সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিল। শহীদ শরিফ ওসমান হাদি তার সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক চেতনা এবং জাতীয় ঐক্য শক্তিশালী করতে চেয়েছিলেন। আখতার হোসেনের বক্তব্যে উঠে এসেছে, শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য সমগ্র সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান।
এ প্রসঙ্গে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষায় সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলনের মধ্যে সম্পর্ক সুদৃঢ় রাখতে হবে। শহীদ শরিফ ওসমান হাদির সাংস্কৃতিক উদ্যোগ কেবল একটি ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ড নয়, বরং তা জাতির ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের সঙ্গে সংযুক্ত। তাই তার প্রতি সম্মান প্রদর্শন এবং তার আদর্শকে অনুসরণ করা বাংলাদেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
জানাজা অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই শোকাহত হলেও তারা প্রতিজ্ঞা করেন, শহীদদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য তারা সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে কাজ চালিয়ে যাবেন। দেশের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মহলে এটি একটি প্রতীকী বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে যে, শহীদদের আদর্শ এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা এখনও জনমনে জীবিত।
এভাবে দেশের নাগরিকরা একত্র হয়ে শহীদদের স্মৃতিকে সন্মান জানাচ্ছেন এবং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশের গণতান্ত্রিক মর্যাদা বজায় রাখার লক্ষ্য স্থির করছেন। শহীদ শরিফ ওসমান হাদির নেতৃত্বে শুরু হওয়া সাংস্কৃতিক লড়াইকে পরিপূর্ণ করার এই উদ্যোগ ভবিষ্যতে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।