জাতীয় ডেস্ক

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আয়োজনে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে যেকোনো মূল্যে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে হবে। বৈঠক রোববার (২১ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক বিষয়াদি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হয়।

প্রধান আলোচ্যসূচিতে ছিল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন, আসন্ন বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে গৃহীত নিরাপত্তা-সংক্রান্ত পদক্ষেপ, এবং শহিদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতারের অগ্রগতি।

পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছে, সম্প্রতি দুটি জাতীয় দৈনিক এবং দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে ৩১ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এসব ঘটনায় সোমবার সকাল পর্যন্ত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হলেন মো: কাশেম ফারুকি, মো: সাইদুর রহমান, রাকিব হোসেন, মো: নাইম, মো. সোহেল রানা, এবং মো. শফিকুল ইসলাম। অন্যান্য শনাক্তকৃতদের গ্রেফতারের অভিযান চলমান রয়েছে।

এছাড়া চট্টগ্রামে ভারতের সহকারী হাইকমিশনারের বাসভবনের নিকটে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা তিনজনকে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে শনাক্ত করা হয়েছে। বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত এবং অন্যান্য বেআইনি কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।

অপরাধ দমন, নিরাপত্তা সংরক্ষণ এবং সামাজিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চলমান অভিযান চালাচ্ছে। বিশেষ করে আসন্ন উৎসব এবং নির্বাচনী সময়ের পূর্বাভাসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য প্রশাসনিক ও পুলিশি প্রস্তুতি জোরদার করা হয়েছে।

বৈঠকে গৃহীত পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে শহরে নিরাপত্তা চৌকস রাখা, জনসমাবেশ পর্যবেক্ষণ, সম্ভাব্য সংঘাত প্রতিরোধ, এবং সন্দেহভাজনদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেফতারের ব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রতিটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ ও সিসিটিভি নজরদারি বাড়ানো হয়েছে, যাতে অপরাধীদের দ্রুত শনাক্ত ও দমন করা সম্ভব হয়।

প্রশাসন সূত্রে আরও জানানো হয়েছে, শহিদ শরীফ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ডের মতো সংবেদনশীল ঘটনার তদন্ত দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করার পাশাপাশি দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা সরকারের প্রধান অগ্রাধিকার। নিরাপত্তা বাহিনী আশ্বস্ত করেছে, প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে যাতে নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় এবং আসন্ন নির্বাচনের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখা সম্ভব হয়।