নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা: চব্বিশের জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ইমাম হাসান তাইম হত্যার ঘটনায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের ফরমাল চার্জ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা দেওয়া হয়েছে।
আনুষ্ঠানিক অভিযোগে আসামি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, ওয়ারী জোনের সাবেক ডিসি ইকবাল হোসাইন, এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম, মো. মাসুদুর রহমান মনির, নাহিদ ফেরদৌস, যাত্রাবাড়ী থানার তৎকালীন ওসি আবুল হাসান, জাকির হোসাইন, মো. ওহিদুল হক মামুন, সাজ্জাদ উজ জামান ও মো. শাহদাত আলীকে। এছাড়া বাকিরা পুলিশের বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় তাইম বন্ধুর সঙ্গে চা পান করতে বের হন। সে সময় যাত্রাবাড়ী এলাকায় পুলিশ তৎপর হয়ে গুলিবিদ্ধ করেন। আহত অবস্থায় তাইমের মৃত্যু হয়। নিহতের বাবা মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়া, যিনি রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সের উপ-পরিদর্শক, তাঁর ছেলের মরদেহ পাওয়ার পর ফোনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানিয়েছিলেন, “স্যার, আমার ছেলেটা মারা গেছে। বুলেটে ওর বুক ঝাঁঝরা হয়ে গেছে। স্যার, আমার ছেলে আর নেই।” তিনি প্রশ্নও করেছিলেন, একজনকে মারতে কতগুলো গুলি লাগে।
আসামিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগে বলা হয়েছে, তারা দায়িত্বের সুযোগ নিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত করেছেন। মামলার প্রসিকিউশন পর্যায়ে প্রয়োজনীয় প্রমাণ ও সাক্ষী উপস্থাপন করে আইনের আওতায় বিচার কার্যক্রম এগিয়ে নেবে।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এই পদক্ষেপকে মানবাধিকার রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। মামলার সাক্ষ্য ও প্রমাণের ভিত্তিতে আদালত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। তদন্ত কর্মকর্তারা আশা করছেন, এই অভিযোগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে এবং ভবিষ্যতে পুলিশি হস্তক্ষেপের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা প্রতিরোধে সহায়ক হবে।
এ ঘটনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনও নজর রাখছেন এবং ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম মনিটর করছেন।