1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:৩৩ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
বিপিএলের দ্বাদশ আসর শুরু: সিলেট থেকে ফাইনাল পর্যন্ত ৩৪ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ছয় দল ২০২৫ সালে ঢালিউডের বাণিজ্য ও সৃজনশীলতা উভয়ই রমরমা ছিল দ্যা আটলান্টিক ক্রুজ জাহাজে আগুন, এক কর্মচারীর মৃত্যু পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে বিপুল পরিমাণ টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী উদ্ধার শহীদ ওসমান হাদির কবর জিয়ারত শাহবাগ মোড় ছেড়ে দিল ইনকিলাব মঞ্চ পেসারদের ঝড়ে অস্ট্রেলিয়ার বিপর্যয়, ১৭৪ রানের লক্ষ্য নিয়ে ইংল্যান্ডের সামনে অ্যাশেজ লড়াই কিয়েভে শক্তিশালী বিস্ফোরণ, রুশ মিসাইল হামলার আশঙ্কা ঘন কুয়াশায় সারাদেশে নৌযান চলাচল বন্ধ তারেক রহমানের আজকের রাজধানী সফর: কবর জিয়ারত, এনআইডি নিবন্ধন ও আহতদের স্বাস্থ্য যাচাই তারেক জিয়া কি দূরদর্শিতার পরিচয় দেবেন?

ঘন কুয়াশায় সারাদেশে নৌযান চলাচল বন্ধ

রিপোর্টার
  • আপডেট : শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ১১ বার দেখা হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি

ঘন কুয়াশার কারণে সারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)। শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন সংস্থাটির চাঁদপুরের উপপরিচালক (নৌ-নিট্রা) বাবু লাল বৈদ্য। এর আগে একই দিন দিবাগত রাত সাড়ে ১০টা থেকে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়, যার ফলে ঢাকা, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশালসহ দেশের অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব নৌরুটে লঞ্চ, স্পিডবোট, ফেরি, কার্গো ও অন্যান্য নৌযান চলাচল স্থগিত রয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ জানায়, হঠাৎ করে নদীপথে কুয়াশার ঘনত্ব অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় নৌ চলাচল নিরাপদ নয় বলে বিবেচিত হয়েছে। কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা (ভিজিবিলিটি) কমে যাওয়ায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বহুগুণ বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে রাতের নৌযাত্রায়। নৌ নিরাপত্তা নীতিমালা অনুসারে, দৃষ্টিসীমা কমে গেলে নৌযান চলাচল সীমিত বা বন্ধ রাখার বিধান রয়েছে, যা যাত্রী, নৌচালক ও নৌপথের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োগ করা হয়।

উপপরিচালক বাবু লাল বৈদ্য বলেন, “নদীতে কুয়াশার ঘনত্ব হঠাৎ করে বৃদ্ধি পেয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে রাত সাড়ে ১০টা থেকে ঢাকা, চাঁদপুর, ভোলা, বরিশালসহ সারাদেশে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। চলার পথে যেসব লঞ্চ ও নৌযান রয়েছে, সেগুলোকে যেখানে অবস্থান করছে সেখানেই নদীর পাড়ে নোঙর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কুয়াশা কেটে গেলে নৌ চলাচল স্বাভাবিক হবে।”

সংস্থাটির নির্দেশনা অনুযায়ী, চলমান লঞ্চগুলোকে নদীর তীরবর্তী নিরাপদ স্থানে নোঙর করে রাখতে বলা হয়েছে, যাতে কোনো নৌযান ঘন কুয়াশার মধ্যে চলাচল অব্যাহত না রাখে। স্পিডবোট, ট্রলার ও ছোট নৌযানগুলোকেও পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত যাত্রা স্থগিত রাখতে বলা হয়েছে। কুয়াশা কাটার পর বিআইডব্লিউটিএ’র নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হলে নৌ চলাচল পুনরায় শুরু করা হবে।

বাংলাদেশের নৌ-পরিবহন খাত মূলত নদীভিত্তিক এবং দক্ষিণাঞ্চল, উপকূলীয় জেলা ও দ্বীপাঞ্চলে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম। ঢাকা-চাঁদপুর-বরিশাল-ভোলা-পটুয়াখালীসহ বহু নৌরুটে প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী যাতায়াত করেন। এসব রুটে রাতে নৌযাত্রা বেশি জনপ্রিয় হলেও কুয়াশা মৌসুমে (ডিসেম্বর-জানুয়ারি) নৌ দুর্ঘটনার ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। কুয়াশা ঘন হলে দিকনির্দেশনা বোঝা কঠিন হয়ে পড়ে এবং রাডার ও লাইটিং ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও দৃষ্টিসীমা সীমাবদ্ধ হওয়ায় সংঘর্ষ ও নাবিক ভুলের সম্ভাবনা বাড়ে।

বিআইডব্লিউটিএ’র তথ্য অনুযায়ী, কুয়াশা মৌসুমে নৌ চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও সতর্কতা জারি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া, তবে সারাদেশে একযোগে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ ঘোষণা সাধারণত তখনই করা হয়, যখন কুয়াশার ঘনত্ব বিপজ্জনক মাত্রায় পৌঁছে এবং দৃষ্টিসীমা অত্যন্ত কমে যায়। দেশের বিভিন্ন নদী অববাহিকায় একই সময়ে কুয়াশার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিআইডব্লিউটিএ’র ভেসেল ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (ভিটিএমআইএস) এবং নদী নিয়ন্ত্রণ কক্ষগুলো এসব পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে থাকে।

এদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে ২টার মধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলার হরিনা এলাকায় মেঘনা নদীতে ঢাকাগামী দুটি লঞ্চের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে চারজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। সংঘর্ষে ‘জাকির সম্রাট-৩’ লঞ্চটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং মাঝনদীতে ডুবো-ডুবো অবস্থায় ভাসতে থাকে। দুর্ঘটনার পর উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা হলেও সংঘর্ষে নৌযানের কাঠামোগত ক্ষতি এবং পানিপ্রবেশের কারণে সেটি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়নি। এ ধরনের দুর্ঘটনা কুয়াশার মৌসুমে নৌ নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি ও নাবিকদের দৃষ্টিসীমা সংকটের প্রভাব পুনরায় আলোচনায় নিয়ে আসে।

দুর্ঘটনার সূত্র ধরে শুক্রবার সকালে ঝালকাঠি লঞ্চঘাট থেকে অপর লঞ্চ ‘অ্যাডভেঞ্চার-৯’-কে জব্দ করা হয় এবং চারজন স্টাফকে আটক করা হয়। বিআইডব্লিউটিএ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন জানায়, আটক স্টাফদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং দুর্ঘটনার প্রযুক্তিগত তদন্তের মাধ্যমে সংঘর্ষের কারণ, নাবিকদের ভূমিকা, নৌযানের সিগন্যালিং, রুট অনুসরণ এবং সম্ভাব্য নৌ-চালনা ত্রুটি বিশ্লেষণ করা হবে। নৌ নিরাপত্তা আইনের আওতায় তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত লঞ্চটি সংস্থাটির হেফাজতে থাকবে এবং তদন্তে দায় নির্ধারণ করা হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশে নৌ-দুর্ঘটনা প্রতিরোধে নাবিক প্রশিক্ষণ, নৌযানের ফিটনেস, লাইটিং ব্যবস্থা, রাডার সিস্টেম, নোঙর ব্যবস্থাপনা ও নৌ-পথের নিয়ন্ত্রণ—সবগুলো ক্ষেত্রই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কুয়াশার সময় নৌযান চলাচল নিয়ন্ত্রণে সংস্থার সিদ্ধান্তকে নৌ-পরিবহন বিশেষজ্ঞরা ‘যৌক্তিক ও নিরাপত্তামূলক’ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচনা করেন। তারা মনে করেন, কুয়াশা-জনিত নিষেধাজ্ঞা প্রয়োগ আরও কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হলে এবং নৌযানগুলো নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হওয়ার আগেই নিরাপদ নোঙর পয়েন্টে পৌঁছাতে পারলে সংঘর্ষের ঝুঁকি কমে আসবে।

বিআইডব্লিউটিএ’র পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কুয়াশা কাটার সঙ্গে সঙ্গে পর্যায়ক্রমে নৌ চলাচল পুনরায় শুরু হবে। তবে যাত্রা শুরুর আগে প্রতিটি নৌরুটে দৃষ্টিসীমা পর্যবেক্ষণ এবং নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সবুজ সংকেত নিশ্চিত করা হবে। যাত্রীদেরও নৌযাত্রার আগে আবহাওয়া ও নৌ চলাচল সংক্রান্ত নির্দেশনা যাচাই করে যাত্রা পরিকল্পনা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে নদীপথে আটকে পড়া লঞ্চ ও নৌযানগুলোর অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং নৌ-পথ নিরাপদ হলে পরবর্তী ঘোষণা প্রদান করা হবে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com