জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
২০২৫ সালের শেষ প্রান্তে ঢালিউডের সিনেমা ব্যবসা ও সৃজনশীলতার সার্বিক পর্যালোচনা শুরু হয়েছে। চলতি বছরে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র বাজারে মোট আনুমানিক ৬০ কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে। চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দেশের পূর্ণ বক্স অফিস হিসাব থাকলে এই সংখ্যা আরও বেশি হতে পারতো। তবে ব্যবসার পাশাপাশি ছবির গল্প, দৃশ্যায়ন ও চরিত্রগুলো দর্শকদের মনে জায়গা করে নিয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় ২০২৫ সালের সিনেমা বাজার রমরমা ছিল। বিশেষ করে পাঁচটি সিনেমা বছরের আলোচনায় ছিলেন।
বরবাদ: মেহেদী হাসান হৃদয় পরিচালিত এবং শাকিব খান অভিনীত ‘বরবাদ’ সিনেমাটি রোজার ঈদে মুক্তি পায়। ছবিটির বাজেট ছিল ১৫ কোটি, এবং আনুমানিক আয় হয়েছে ৩০ কোটি। কলকাতার ইধিকা পাল শাকিবের বিপরীতে অভিনয় করেছেন। যিশু সেনগুপ্ত খল চরিত্রে, এবং শ্যাম ভট্টাচার্য শাকিবের সহকারীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। ছবিটির নির্মাণশৈলী, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ভিন্নধর্মী গল্প দর্শকদের মন জয় করেছে।
জংলি: রোজার ঈদে মুক্তি পাওয়া এম রহিম পরিচালিত ‘জংলি’ সিনেমা শিশুদের শ্লীলতাহানির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরির বার্তা বহন করেছে। সিয়াম আহমেদের অভিনয় কেরিয়ারে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। প্রার্থনা ফারদিন দীঘি ও শবনম বুবলী সহ অভিনয় করেছেন। প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান জানিয়েছে, ছবির আয় আনুমানিক ৫ কোটি।
উৎসব: কোরবানির ঈদে মুক্তি পাওয়া তানিম নূর পরিচালিত ‘উৎসব’ পারিবারিক গল্পের চিত্রায়ন করেছে। আফসানা মিমি, জাহিদ হাসান, জয়া আহসান, অপি করিম, চঞ্চল চৌধুরী এবং সাদিয়া আয়মান অভিনয় করেছেন। পারিবারিক ঘরানার কারণে প্রেক্ষাগৃহে এটি ভালো ব্যবসা করেছে এবং আয় হয়েছে আনুমানিক ৬ কোটি।
তাণ্ডব: ঈদুল আজহার প্রতীক্ষিত সিনেমা রায়হান রাফীর ‘তাণ্ডব’। শাকিব খানের ‘তামাটে লুক’ এবং বড় কাস্টিং দর্শকদের আকৃষ্ট করেছে। জয়া আহসান, সাবিলা নূর, আফজাল হোসেন সহ অভিনয় করেছেন, এবং সিয়াম ও আফরান নিশো ক্যামিও চরিত্রে ছিলেন। পাইরেসির কারণে আয় কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবুও সিনেমার আয় দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ কোটির কাছাকাছি।
দাগি: রোজার ঈদে মুক্তি পাওয়া ‘দাগি’ সিনেমা আফরান নিশোর উপস্থিতির কারণে আলোচিত। বছরের শুরুতে মুক্তি পাওয়া এই সিনেমা দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি করেছে। প্রযোজক দাবি করেছেন এটি ‘ব্লকবাস্টার হিট’, এবং আনুমানিক আয় হয়েছে ৭ কোটি।
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক ও পরিবেশক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাণিজ্যিক ও বিকল্পধারা মিলিয়ে মোট ৪৭টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। রোজার ঈদ ও কোরবানির ঈদে ১২টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তবে দুই ঈদ ছাড়া বছরের বাকি সময়ে মুক্তি পাওয়া সিনেমাগুলো ব্যবসায়িক সাফল্য পাননি; অধিকাংশ তাদের মূলধন তুলতেও হিমশিম খেয়েছে।
উল্লেখ্য, এই প্রতিবেদনে সিনেমাগুলোর ক্রমিক অবস্থান বা র্যাঙ্কিং বোঝানো হয়নি।