নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ ভারতকে দেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যান্ডউইথ ট্রানজিট প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। এই প্রস্তাবের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। তবে, বাংলাদেশের টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) এই প্রস্তাবটি ফিরিয়ে দিয়েছে।
আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এখন আর এই ট্রানজিট সুবিধা প্রদান করা হবে না। বিটিআরসির জারি করা ১ ডিসেম্বরের নির্দেশনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই ট্রানজিট সুবিধার মূল উদ্দেশ্য ছিল, আখাউড়া সীমান্তে একটি ইন্টারনেট সার্কিট স্থাপন করে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে সংযোগ পৌঁছানো। ব্যান্ডউইথ প্রযুক্তি হলো ইন্টারনেটের গতি নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ্ধতি, যা প্রতি সেকেন্ডে তথ্য আদান-প্রদান করার সক্ষমতা নির্দেশ করে।
যদিও এ ধরনের ট্রানজিটের জন্য প্রথমে ভারতীয় টেলিকম কোম্পানি ভারতী এয়ারটেল লিমিটেডের সঙ্গে বাংলাদেশী প্রতিষ্ঠান সামিট কমিউনিকেশনস এবং ফাইবার অ্যাট হোম যৌথভাবে আবেদন করেছিল, কিন্তু বিটিআরসি এই প্রস্তাব গ্রহণ না করার পেছনে কৌশলগত উদ্বেগ রয়েছে।
বিটিআরসির সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশের ভূখণ্ড দিয়ে ব্যান্ডউইথ ট্রানজিটের সুবিধা ভারতের জন্য বেশি লাভজনক হবে, তবে বাংলাদেশ এতে খুবই সীমিত লাভ পাবে। বিশেষ করে, বাংলাদেশের অবস্থান যদি আঞ্চলিক ডিজিটাল হাব হিসেবে সুসংহত রাখতে হয়, তাহলে এমন সিদ্ধান্ত গ্রহণে বিপরীত প্রভাব পড়তে পারে।
আনুমানিক তথ্য মতে, সামিট কমিউনিকেশনসের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফরিদ খান আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য ফারুক খানের ভাই, এবং ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত। এই সম্পর্কের কারণে, গত সময়কালে ওই প্রস্তাবে প্রাথমিক সম্মতি মিললেও এখন তা প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশ সরকার এবং বিটিআরসি জানিয়েছে যে, এই ধরনের ব্যান্ডউইথ ট্রানজিট সেবা বাংলাদেশের কৌশলগত অবস্থান এবং স্বার্থের বিরুদ্ধে যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট সরকারের এই পদক্ষেপের ফলে ভারতের নীতিমালা এবং দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ডিজিটাল অবকাঠামো নিয়ে আরো কৌশলগত আলোচনার প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেতে পারে।