নিজস্ব প্রতিবেদক
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। পূর্বে নির্বাচনী সমঝোতার অংশ হিসেবে আসনটি বিএনপির শরিক বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি)-এর চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থকে ছেড়ে দেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এসেছে। রোববার (২৮ ডিসেম্বর) তারেক রহমানের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণার মাধ্যমে ঢাকা-১৭ আসনের রাজনৈতিক সমীকরণ নতুন করে আলোচনায় এসেছে।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, তারেক রহমানের পক্ষে ইতোমধ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করা হয়েছে। রোববার সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপার্সনের একান্ত সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার সেগুনবাগিচায় অবস্থিত ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর দপ্তর থেকেই এ মনোনয়নপত্র নেওয়া হয়।
ঢাকা-১৭ আসনটি রাজধানীর একটি গুরুত্বপূর্ণ ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল আসন হিসেবে বিবেচিত। এই আসনে নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে আগেই ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছিলেন বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিভ রহমান পার্থ। পোস্টার, ব্যানার ও সাংগঠনিক তৎপরতার মাধ্যমে তিনি এলাকায় সক্রিয় ছিলেন। তবে তারেক রহমানের প্রার্থিতার ঘোষণার পর তিনি এই আসন থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।
এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় আন্দালিভ রহমান পার্থ বলেন, ঢাকা-১৭ আসনের জন্য তারেক রহমানই সর্বোত্তম প্রার্থী। তিনি জানান, তারেক রহমানের প্রতি সম্মান জানিয়ে তিনি এই আসন থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেননি। পার্থ আরও জানান, তিনি ইতোমধ্যে ভোলা-১ আসন থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন এবং সেই আসন থেকেই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিএনপি ও তার শরিকদের মধ্যে আসন বণ্টন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা চলছিল। প্রাথমিকভাবে ঢাকা-১৭ আসনটি বিজেপির জন্য বরাদ্দ রাখার বিষয়টি চূড়ান্ত বলে মনে করা হলেও রাজনৈতিক বাস্তবতা ও কৌশলগত বিবেচনায় শেষ মুহূর্তে পরিবর্তন আনা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের একজনের ভাষ্য, রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ আসনে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের প্রার্থিতা বিএনপির নির্বাচনী কৌশলের অংশ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, তারেক রহমানের ঢাকা-১৭ আসনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা শুধু একটি আসনের প্রার্থী পরিবর্তন নয়, বরং এটি বিএনপির নির্বাচনী অবস্থান ও বার্তার প্রতিফলন। দলটি রাজধানীতে নিজেদের শক্ত অবস্থান জানান দিতে এবং ভোটারদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা তৈরির লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, নির্বাচন কমিশনের নির্ধারিত তফসিল অনুযায়ী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত সময়ের মধ্যে তাদের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করছে। ঢাকা-১৭ আসনে এখন তারেক রহমানের প্রার্থিতা ঘোষণার পর ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাত্রা বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি ও তার মিত্র দলগুলো সমন্বিতভাবে নির্বাচনী প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আসন সমঝোতা, প্রার্থী বাছাই এবং প্রচার কৌশল নির্ধারণ—সবকিছুই এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ঢাকা-১৭ আসনের সাম্প্রতিক এই পরিবর্তন রাজধানীর রাজনীতিতে নতুন আলোচনা ও কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে।