ফরিদপুর প্রতিনিধি
মুজিববর্ষ উপলক্ষে ফরিদপুরের সালথা উপজেলা সদরে নির্মাণ করা হয়েছে একটি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধন করা প্রথম পর্যায়ের ৫০টি মডেল মসজিদের মধ্যে এটি অন্যতম। তবে উদ্বোধনের আগেই মসজিদ ভবনের ফ্লোরে লাগানো ভাঙা টাইলস ও বাঁকা দেওয়ালসহ নানা ত্রুটি নিয়ে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মসজিদ নির্মাণে এই অনিয়মের বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
৫০ মডেল মসজিদ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
আজ ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন
মুজিব বর্ষে মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় সালথা উপজেলা পরিষদের পাশে সাড়ে ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে তিনতলা ভবনের এই মডেল মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এই নির্মাণ কাজটি করে এস রহমান অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি ঠিকাদারি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ শুরু থেকেই নানারকম অনিয়ম দেখা গেছে। এখানে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। ঢালাই কাজে মোটা ডোমার বালু ব্যবহারের পরিবর্তে লোকাল বালু, নিম্নমানের পাথর ও ইট ব্যবহার করা হয়েছে। নির্মাণ কাজে দক্ষ মিস্ত্রি নিয়োগ না করায় মসজিদের ফ্লোর বিভিন্নস্থানের ভাঙা টাইলসগুলো উঠে যাচ্ছে ও ফেটে চৌচির হচ্ছে। এমনকি কয়েকটি পিলার ও দেওয়াল বাঁকা হয়ে গেছে।
সালথার এই মডেল মসজিদের নিম্নমানের কাজ প্রসঙ্গে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. ওয়াদুদ মাতুব্বর বলেন, মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। সেই প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম মেনে নেওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রীও মেনে নেবেন না। আমরা নির্মাণ কাজটি ঘুরে দেখলাম। নিয়মমাফিক কাজটি করা হয়নি। কাজে ব্যাপক অনিয়ম চোখে পড়েছে। যে কারণে উদ্বোধনের আগেই টাইলসগুলো উঠে যাচ্ছে। ফ্লোর ও দেওয়ালের বিভিন্নস্থানে লাগানো টাইলস ধরলেই হাতের সাথে উঠে আসছে। পিলারগুলো ও দেওয়াল বাঁকা হয়ে আছে। সাড়ে ১২ কোটি টাকার কাজে এত অনিয়ম আসলেই মেনে নেওয়া যায় না। বিষয়টি নিয়ে আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।
মসজিদ নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ জানিয়ে উপজেলা ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সমন্বয়কারী মাহমুদুল হাসান বলেন, । ধর্মীয় কাজ হওয়া সত্ত্বেও মসজিদের কাজে ব্যবহার হওয়ায় সব মালামালই নিম্নমানের। যে কারণে দেওয়ালে হাত রাখলেও পলেস্তারা ও চুন হাতের সাথে ওঠে আসে। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আসা সকলেই মসজিদ নির্মাণ কাজের খারাপ দৃশ্য নিজ চোখে দেখে গেছেন।
ফরিদপুর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী পরিচালক আশরাফ আলী বলেন, মসজিদ নির্মাণ কাজে কিছু অনিয়ম আমরা দেখেছি। ঠিকাদার এসব ঠিক করে দিতে চেয়েছেন।
মডেল মসজিদ নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার ও অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদার আতিকুর রহমান বলেন, উদ্বোধন করা হবে বলে তাড়াহুড়ো করে দ্রুত কাজ শেষ করতে হয়েছে। এজন্য অনেক কাজই সঠিক বা শিডিউল মতো করা সম্ভব হয়নি। তবে এখনও সময় আছে। যেসব সমস্যা আছে, সবই ঠিকঠাক করা হবে। আমি সব অসঙ্গতি দূর করে দেব।