কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি:
চার মাস ১০ দিন পর কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের ৯ টি দানবাক্স খুলে এবার পাওয়া গেছে ২৭ বস্তা টাকা।এখন চলছে গণনার কাজ।
শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ৭ টায় মসজিদের ৯টি দানবাক্স খোলা হয়েছে। সাধারণত তিন মাস পর পর দানবাক্সগুলি খোলা হলেও এবার রমজানের কারণে ৪ মাস ১০ দিন পর খোলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রতি তিন মাস পরপর এই মসজিদের দানবাক্সগুলি খোলা হয়।তবে রমজানের কারণে এবার ৪ মাস ১০ দিন পর দানবাক্স গুলি খোলা হয়েছে।দানবাক্সগুলো খোলা হলে ২৭ বস্তা টাকা পাওয়া যায়। এখনও চলছে গণনার কাজ।
মসজিদে আগে আটটি দানবাক্স ছিল, দানের টাকা বৃদ্ধি পাওয়ায় আরেকটি দানবাক্স বাড়ানো হয়েছে। এখন পাগলা মসজিদে দানবাক্সের সংখ্যা ৯টি।
টাকা গণনার কাজে অংশ নিয়েছেন, মসজিদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য, মসজিদ কমপ্লেক্সে অবস্থিত মাদ্রাসা ও এতিমখানার শিক্ষক-শিক্ষার্থী এবং রূপালী ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
মসজিদ পরিচালনা কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সকাল ৭ টায় জেলা প্রশাসক মো. আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার রাসেল শেখ ও জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের দানবাক্সগুলো খোলা হয়। দানবাক্স খুলে দানের টাকা এক এক করে ২৭ টি বস্তায় ভরে আনা হয় গণনার জন্য। সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে টাকা গণনার কাজ। তারপর জানা যাবে এবারের দানের মোট টাকার পরিমাণ।
সবশেষ ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বর খোলা হয়েছিল দানবাক্সগুলো। তখন রেকর্ড ছয় কোটি ৩২ লাখ ৫১ হাজার ৪২৩ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। এছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকার পাওয়া যায়।
২০২৩ সালে চারবার খোলা হয়েছিল কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স। চারবারে মোট ২১ কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৮১ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। টাকার পাশাপাশি হীরা, বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালংকারও পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ।
এই মসজিদের আয়ের একটা অংশ আশেপাশের অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা সহ বিভিন্ন উন্নয়ন ও সেবামূলক খাতে ব্যয় করা হয়। এছাড়া ২০০২ সালে মসজিদের পাশে একটি হাফেজিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ক্যান্সার, কিডনি রোগে আক্রান্ত দরিদ্র ব্যক্তিদেরও এই তহবিল থেকে সাহায্য দেয়া হয়।
বর্তমানে লেকসিটি প্রকল্পের আওতায় পাগলা মসজিদের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া নরসুন্দা নদী খনন, দৃষ্টিনন্দন সেতু নির্মাণ, মসজিদের শোভাবর্ধন করায় এবং রঙিন আলোকসজ্জার জন্য দিনে ও রাতে মসজিদটি দেখতে চমৎকার লাগে। দেশের দূরদূরান্ত থেকে নানা শ্রেণি পেশার মানুষ মসজিদটি দেখতে ভিড় জমান।
বিশেষত জুমার নামাজের সময় অত্যধিক মানুষের সমাগমে মসজিদসহ আশেপাশের রাস্তা ঘাট পরিপূর্ণ হয়ে যায়।মুসল্লিদের সুবিধার্থে মসজিদের পরিসর আরও বিস্তৃত করতে মসজিদ ও ইসলামিক কমপ্লেক্সের জন্য ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যা বাস্তবায়ন হলে ৬০ হাজার মুসল্লি একসাথে নামাজ আদায় করতে পারবেন বলে জানা গেছে।