1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৩:১৫ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
লক্ষ্মীপুর জেলা নির্বাচন অফিসে অগ্নিসংযোগ, দ্রুত নিয়ন্ত্রণে বড় ক্ষতি এড়ানো চীনা পেশাজীবীদের জন্য ভিসা প্রক্রিয়া সহজ করল ভারত হাতিয়ায় অচল নৌ-অ্যাম্বুলেন্সে ব্যাহত জরুরি স্বাস্থ্যসেবা চার দশক পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ ও হলসংসদ নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদির অবস্থা সংকটাপন্ন, উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা বাখেরআলী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত তসিকুল ইসলামের মরদেহ হস্তান্তর শরিফ ওসমান হাদির ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ চায় ইনকিলাব মঞ্চ মাথায় গুলিবিদ্ধ শরিফ ওসমান হাদির অবস্থা আশঙ্কাজনক, ঝুঁকিপূর্ণ ৭২ ঘণ্টা পার করছেন গুগলে সর্বাধিক অনুসন্ধান হওয়া ভারতীয় হিসেবে উঠে এলেন ১৪ বছর বয়সী ক্রিকেটার বৈভব সূর্যবংশী সন্ত্রাসী হামলার পেছনের শক্তি প্রকাশের দাবি জামায়াত আমিরের

বিদেশেও বিপাকে অর্থ পাচারকারীরা কয়েকটি গ্রুপের বিপুল সম্পদ জব্দ

রিপোর্টার
  • আপডেট : মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫
  • ৫৫ বার দেখা হয়েছে

বিশেষ প্রতিবেদক

 

দেশের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ভূমিসেবা, স্থানীয় সরকারসহ সরকারি বিভিন্ন খাতে সংঘটিত দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। এসব অর্থ পাচারের সঙ্গে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রভাবশালী মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও তাদের ঘনিষ্ঠ কিছু ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ক্ষমতার অপব্যবহার, ঋণ জালিয়াতি, ঘুষ ও কমিশনের অংশ বিদেশে স্থানান্তর করে তারা গড়ে তুলেছেন বিলাসবহুল জীবনযাপন ও সম্পদের পাহাড়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর পাচারের সঙ্গে জড়িতদের দেশে-বিদেশি শান্তিতে থাকতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই ধারাবাহিতকায় এবার দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচারে জড়িত ব্যক্তিদের বিদেশি সম্পদ জব্দেও জোর দেওয়া হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিশেষ বিবেচনায় তদন্তে থাকা গ্রুপগুলোর বিরুদ্ধে কাজ শেষ করতে জোর দিচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ছয়টি গ্রুপের বিভিন্ন দেশে বিপুল অর্থও জব্দ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে বিষয়গুলো নিশ্চিত করছে।

সরকারের উচ্চপর্যায়ের সূত্র বলছে, দুর্নীতি করে দেশের অর্থ বিদেশে পাচার করা ব্যক্তিদের দেশেও শান্তিতে থাকতে দেওয়া হবে না, বিদেশেও নয়। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে গঠিত একটি কার্যকর টাস্কফোর্স অর্থ পাচার রোধ এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করছে।

এই টাস্কফোর্স এরই মধ্যে ছয়টি প্রভাবশালী ব্যবসায়ী গ্রুপ ও একজন সাবেক মন্ত্রীর বিদেশে থাকা বিপুল পরিমাণ সম্পদ শনাক্ত করে তা জব্দের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার ঘনিষ্ঠজনদের মালিকানাধীন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বেক্সিমকো গ্রুপ, নাসা গ্রুপ, সামিট গ্রুপ, জেমকন গ্রুপসহ দেশের অন্যতম বৃহৎ আবাসন ব্যবসায়ী গ্রুপ।

সরকারি সূত্র অনুযায়ী, এসব গ্রুপের নামে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাষ্ট্রে অন্তত ১৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, ৪৬ মিলিয়ন ব্রিটিশ পাউন্ড ও ২৯১ মিলিয়ন ইউরো সমপরিমাণ সম্পদ জব্দ করা হয়েছে, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। এসব জব্দের উদ্যোগ এসেছে মূলত বাংলাদেশের অনুরোধে এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক গোয়েন্দা সহযোগিতার ভিত্তিতে। সম্পদ জব্দের পাশাপাশি কয়েকটি দেশে অর্থ পাচারের দায়ে ওই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের চূড়ান্ত রায় এবং সম্পদের মালিকানার বিষয় নিশ্চিত হওয়ার পরই এসব অর্থ ফেরত পাওয়ার আশা করছে বাংলাদেশ।

তদন্তের সঙ্গে যুক্ত এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে আমরা কয়েকটি ধাপে কাজ করছি। এ মুহূর্তে আমরা বিদেশে কী পরিমাণ সম্পদ পাচার হয়েছে এবং সেগুলো কোন দেশে, তা নির্ণয়ে কাজ করছি। এর মধ্যে কয়েকটি গ্রুপের বিপুল পরিমাণ সম্পদ বিদেশে জব্দও করা হয়েছে। আগামী সেপ্টেম্বর থেকে বেশ কয়েকটি দেশে ল ফার্ম নিয়োগ দেওয়া হবে। সে লক্ষ্যে বেশ কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। এরপর ডিসেম্বর নাগাদ সংশ্লিষ্ট দেশে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পাচার হওয়া সম্পদ ফেরানো অনেক সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। এজন্য আমাদের দীর্ঘ মেয়াদে কাজ চালিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক সরকার এলে তাদেরও সদিচ্ছার প্রশ্ন রয়েছে। যদি তারাও একমত হয় তাহলে বিপুল পরিমাণ সম্পদ ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ভ্যাট-ট্যাক্স পরিশোধ করেই সম্পদ ফিরিয়ে আনতে হবে।’

জানা গেছে, অর্থ পাচার তদন্তে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সহযোগিতা অর্জনে বিশেষভাবে কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও দুদক। এরই মধ্যে যুক্তরাজ্য, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় বেশ কিছু অগ্রগতি হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একটি ‘ফিন্যান্সিয়াল ট্রান্সপারেন্সি অ্যাগ্রিমেন্ট’ স্বাক্ষরের আলোচনাও চলছে, যা ভবিষ্যতে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া অনেক সহজ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট (বিএফআইইউ) ও দুদকের পক্ষ থেকে ২০২৫ সালের শুরুতে এসব গ্রুপের বিরুদ্ধে বিশদ তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তে দেখা যায়, বাংলাদেশ থেকে ‘অফশোর কোম্পানি’ খোলার মাধ্যমে অর্থ পাচারের পাশাপাশি ভুয়া ইনভয়েস, ওভার ইনভয়েসিং, আন্ডার ইনভয়েসিং এবং ভুয়া রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রমের মাধ্যমেও বিপুল অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। এ তদন্তে লন্ডন, টরন্টো, দুবাই ও সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন ব্যাংকে স্থায়ী আমানত, শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ, বাড়ি-ফ্ল্যাট ও বিলাসবহুল গাড়ি কেনাসহ একাধিক খাতে অর্থ খরচের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এমনকি অনেকের নামে বিদেশে নাগরিকত্ব গ্রহণ ও রাজনৈতিক আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টার তথ্যও এসেছে। একাধিক পাচারকারী পরিবার ও ব্যবসায়িক গোষ্ঠী এরই মধ্যে কানাডার ‘স্নো ওয়াশ রুট’ বা ‘স্নো ওয়াশ প্রোগ্রাম’-এর সুবিধা নিয়ে সেখানকার স্থায়ী বাসিন্দা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর নামে দুবাই, লন্ডন ও মালয়েশিয়ায় অন্তত ৭৫ মিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে রয়েছে বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, শপিং কমপ্লেক্সে অংশীদারত্ব এবং বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার। তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে তদন্ত চলছে।

বেক্সিমকো গ্রুপের বিরুদ্ধে মূলত রপ্তানির নামে অতিরিক্ত অর্থ আয় করে তা বিদেশে রেখে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে বেক্সিমকোর মালিকানাধীন কিছু প্রতিষ্ঠান দুবাই, সিঙ্গাপুর ও যুক্তরাজ্যে অর্থ স্থানান্তরের সঙ্গে যুক্ত। নাসা গ্রুপের বিরুদ্ধে সরকারি প্রকল্পে দরপত্রভিত্তিক লেনদেনে ব্যাপক দুর্নীতি ও কমিশনের অর্থ পাচারের অভিযোগ এসেছে।

জেমকন গ্রুপ ও সামিট গ্রুপের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলনামূলক নতুন হলেও তারা বিগত সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিল বলেই সরকারের নজরে এসেছে। বিশেষ করে সামিট গ্রুপের বিদেশি বিনিয়োগ ও কোম্পানি গঠন নিয়ে কিছু অনিয়মের তথ্য যাচাই করে দেখা হচ্ছে। কোম্পানিটি সিঙ্গাপুরে বিপুল সম্পদের মালিক হলেও বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে কোনো সম্পদ নেয়নি। এমনকি কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে কোনো ধরনের অনুমতির চেষ্টাও করেনি বলে জানা গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান কালবেলাকে বলেন, ‘পাচারকারীরা আইনের চোখে ফাঁকি দিতে বিভিন্ন ধরনের চাতুরতার আশ্রয় নিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো সেসব বিষয় উদ্ঘাটনে কাজ করছে। তারা অবৈধভাবে এক দেশে সম্পদ নিয়ে তারপর অন্য দেশে সেই সম্পদ বৈধভাবে স্থানান্তর করার চেষ্টা করেছে; কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের সম্পদ স্থানান্তরের ইতিহাস বের করতে সক্ষম হয়েছে। এখন আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমরা আশাবাদী, এসব সম্পদ আমরা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব।’

তথ্য বলছে, অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত জটিল, কারণ অনেক দেশই এ ধরনের অর্থকে স্থানীয়ভাবে কর প্রদান করা সাপেক্ষে বৈধ হিসেবে বিবেচনা করে থাকে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তদারকি প্রতিষ্ঠান ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্স (এফএটিএফ), ইন্টারপোল ও জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী সনদের আওতায় বাংলাদেশ বৈশ্বিকভাবে সহযোগিতা চাইতে পারে। এরই মধ্যে জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংস্থা (ইউএনওডিসি) ও ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের ‘স্টোলেন অ্যাসেট রিকভারি ইনিশিয়েটিভ’-এর (এসটিএআর) সঙ্গে বাংলাদেশ অংশীদারত্ব গঠনের প্রস্তুতি নিচ্ছে।

দুদকের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে শতাধিক ব্যক্তি ও কোম্পানির তথ্য সংগ্রহ করেছি, যাদের বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, আবার অনেকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। আমাদের লক্ষ্য, একদিকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা, অন্যদিকে এ ধরনের অপরাধ ভবিষ্যতে যাতে আর না হয়, তা নিশ্চিত করা।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার রোধ এবং পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে আমরা বহুপক্ষীয় কৌশল গ্রহণ করেছি। দেশের অভ্যন্তরে ব্যাংকিং খাতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদার করা হচ্ছে।’

অর্থনৈতিক বিশ্লেষক ড. মইনুল ইসলাম বলেন, দেশের প্রকৃত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে প্রথমেই প্রয়োজন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান। পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনা এবং এ অপরাধে জড়িতদের শাস্তি নিশ্চিত করা গেলে একদিকে যেমন রাষ্ট্রের রাজস্ব বাড়বে, তেমনি দুর্নীতির সংস্কৃতি ভাঙার সুযোগ তৈরি হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের একজন শীর্ষ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা অর্থ পাচারকারীদের বিদেশে স্বস্তিতে থাকতে দিতে রাজি নই। তারা যতই শক্তিশালী হোক না কেন, তাদের সম্পদ ফেরত আনা হবে। সেই প্রক্রিয়া এখন শুরু হয়ে গেছে।’

তিনি জানান, এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কানাডা, যুক্তরাজ্য ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের তিনটি আইনি সংস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের টাস্কফোর্সের নিয়মিত বৈঠক হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও দেশ এ উদ্যোগে যুক্ত হলে পাচার হওয়া অর্থ দ্রুত ফেরত আনার পথ সুগম হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অভিযান ও সম্পদ ফেরত আনার উদ্যোগ শুধু একটি প্রশাসনিক পদক্ষেপ নয়; এটি একটি জাতীয় প্রয়োজন। কারণ এই অর্থ রাষ্ট্রীয় উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ব্যয় হলে কোটি মানুষের জীবনমান উন্নত হতো। এখন এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী দৃষ্টান্ত তৈরি করা গেলে ভবিষ্যতের বাংলাদেশ আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহির রাষ্ট্র হতে পারবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গবেষণা সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের রিসার্চ ফেলো ও অর্থনীতিবিদ এম হেলাল আহমেদ জনি কালবেলাকে বলেন, ‘দুর্নীতিবিরোধী লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আদায়ে বাংলাদেশ যে কৌশল নিয়েছে, তা একাধিক দিক থেকে যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলা যায়। তবে মনে রাখতে হবে, অর্থ পাচার শুধু একটি ব্যক্তিগত অপরাধ নয়; বরং এটি রাষ্ট্রের নীতিগত ব্যর্থতা এবং দুর্নীতির জন্য দায়ী ব্যবস্থাপনার বহিঃপ্রকাশ। ফলে একে শুধুই ব্যক্তি ধরে ধরে শাস্তির বিষয় হিসেবে না দেখে কাঠামোগত সংস্কারের দিকেও নজর দিতে হবে। যারা দশক ধরে দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে, তারা কেবল রাজনৈতিক নয়, প্রশাসনিক, বিচারিক এবং আর্থিক খাতের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ব্যবহার করেই এ সুযোগ নিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বিদেশে জব্দ হওয়া সম্পদ ফেরত আনতে যে দীর্ঘ সময় এবং কূটনৈতিক প্রক্রিয়া লাগে, তা বাংলাদেশ সরকারের বুঝে নেওয়া উচিত। কাজটি এক দিনে বা কয়েক মাসে সম্ভব নয়। তবে এখন যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা নিঃসন্দেহে সাহসী এবং কাঙ্ক্ষিত। সরকার যদি রাজনৈতিক চাপের বাইরে থেকে এ প্রচেষ্টাকে এগিয়ে নিতে পারে, তাহলে এটিই হতে পারে অর্থনীতিকে শৃঙ্খলার পথে ফেরানোর বড় উদ্যোগ।’

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com