জাতীয় ডেস্ক
দেশের ভোটার তালিকায় বড় পরিবর্তন এসেছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে। সর্বশেষ হালনাগাদে নতুনভাবে ১৩ লাখ ৪ হাজার ৮৮০ জন ভোটার যুক্ত হওয়ায় বর্তমানে দেশের মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন।
রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি জানান, আগামী ১৮ নভেম্বর এই সংশোধিত ভোটার তালিকা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হবে এবং এই তালিকাকেই ভিত্তি করে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান ভোটারদের মধ্যে ৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬০ হাজার ৩৮২ জন পুরুষ, ৬ কোটি ২৮ লাখ ৫০ হাজার ৭৭২ জন নারী এবং ১ হাজার ২৩০ জন হিজড়া ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন। গত দুই মাসের ব্যবধানে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩ লাখেরও বেশি, যা দেশের ভোটার তালিকা হালনাগাদের ধারাবাহিকতার অংশ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হলো। এর আগে পূর্ববর্তী দুই দফায়ও নতুন ভোটার সংযোজন ও তথ্য সংশোধনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছিল। কমিশনের মতে, এই ধারাবাহিক হালনাগাদের লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচনের আগে ভোটার তালিকাকে সর্বাধিক নির্ভুল ও হালনাগাদ রাখা।
সংশোধিত ভোটার তালিকাটি এখন নির্বাচনী প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে মাঠপর্যায়ে তথ্য যাচাই, মৃত্যুজনিত বাদ পড়া ভোটারদের অপসারণ এবং নতুন ভোটার অন্তর্ভুক্তির কাজ সম্পন্ন করেছে। এসব তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই ১৮ নভেম্বর প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা।
সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানান, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর আর কোনো ধরনের সংশোধনের সুযোগ থাকবে না। তিনি বলেন, “১৮ নভেম্বর প্রকাশিত তালিকাই হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের একমাত্র ভোটার তালিকা। এরপর এই তালিকার ভিত্তিতেই ভোটগ্রহণের সব প্রস্তুতি নেওয়া হবে।”
নির্বাচন কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, ভোটার তালিকা হালনাগাদ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নতুন ভোটার যুক্ত হওয়ার পাশাপাশি তথ্য সংশোধনের কাজও সম্পন্ন হয়েছে। এতে ভুল জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্য সংশোধন, মৃত ভোটারদের নাম অপসারণ এবং ঠিকানা পরিবর্তন সংক্রান্ত আপডেট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই হালনাগাদকৃত তালিকা নির্বাচন কমিশনের সামগ্রিক প্রস্তুতির অংশ হিসেবে কাজ করবে। কমিশন জানিয়েছে, ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর নির্বাচনের অন্যান্য কার্যক্রম—যেমন নির্বাচনী এলাকা ভিত্তিক ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, ভোটার স্লিপ বিতরণ ও অন্যান্য প্রশাসনিক পদক্ষেপ—ক্রমে শুরু হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, নতুন ভোটার সংযোজনের এই ধারা দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণের ইতিবাচক প্রতিফলন। তবে কমিশন জানিয়েছে, ভোটারদের সঠিক তথ্য ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই তাদের প্রধান অগ্রাধিকার থাকবে, যাতে একটি সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচনী পরিবেশ নিশ্চিত করা যায়।