জাতীয় ডেস্ক
জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে শঙ্কার কোনও কারণ নেই বলে জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, সরকার আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে সম্পূর্ণ বদ্ধপরিকর।
রোববার (৯ নভেম্বর) সকালে রাজশাহীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারকদের সঙ্গে এক আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, নির্বাচন আয়োজনের জন্য উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে সরকার। তিনি উল্লেখ করেন, “রাজনৈতিক দলগুলো মাঝে মাঝে একে অপরের ওপর কিংবা সরকারের উপদেষ্টাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে নানা বক্তব্য দেয়। এসব বক্তব্যের কিছু আংশিক সত্য হলেও অনেক সময় তা এমন ধারণা তৈরি করে যেন নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। বাস্তবে এমন কোনও শঙ্কার অবকাশ নেই।”
আইন উপদেষ্টা আরও জানান, সরকার নির্বাচনের আগে ও চলাকালীন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর অবস্থান বজায় রাখবে। তিনি বলেন, যারা জামিন পেয়ে একই ধরনের অপরাধ পুনরায় সংঘটনের ঝুঁকিতে আছে বা দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত করতে পারে, তাদের ওপর নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। এর মাধ্যমে নির্বাচনকালীন নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার প্রচেষ্টা নেওয়া হচ্ছে।
আদালত ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাড়াতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও জানান ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, আদালতে মামলা নিষ্পত্তির গতি বাড়াতে এবং বিচারক সংকট দূর করতে একজন বিচারকের স্থলে তিনজন বিচারক নিয়োগের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ উদ্যোগ আদালতের মামলার চাপ কমাতে ও বিচারপ্রাপ্তির প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।
আইন উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে বিচার বিভাগ ও প্রশাসনের মধ্যে সমন্বিত প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে, যাতে কোনও ধরনের বিশৃঙ্খলা বা রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি না হয়। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নির্ধারিত সময়ে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং জনগণ এতে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে।
সরকারি পর্যায়ের সূত্রগুলোও জানিয়েছে, নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি জোরদার করেছে। ভোটকেন্দ্রের তালিকা হালনাগাদ, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ এবং নিরাপত্তা পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। পাশাপাশি প্রার্থীদের মনোনয়ন যাচাই-বাছাই এবং প্রচারণা পর্যবেক্ষণেও কঠোর নজরদারি বজায় রাখা হবে।
বিশ্লেষকদের মতে, আইন উপদেষ্টার এই বক্তব্য সরকারের নির্বাচনী প্রস্তুতি সম্পর্কে একটি স্পষ্ট বার্তা দেয়, যা রাজনৈতিক অঙ্গনে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করতে পারে। তারা মনে করছেন, নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা দেশের রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে সুসংহত করবে এবং প্রশাসনিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।