রাজনীতি ডেস্ক
কক্সবাজারের টেকপাড়া এলাকার এক জামায়াত কর্মী জহুর আলম তার যমজ দুই পুত্রসন্তানের নাম শহীদ শরিফ ওসমান হাদির স্মরণে রেখেছেন। সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানা যায়।
জহুর আলম শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড শহর শাখার অর্থ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন। তার যমজ সন্তানের বাবা হওয়ার খুশির খবর জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কক্সবাজার শহর শাখার কর্মপরিষদ সদস্য আমিনুল ইসলাম। তিনি জানান, মা-বাবার সম্মতিতে শহীদ ওসমান হাদির নামে দুই নবজাতকের নামকরণ করা হয়েছে। নতুন দুই সন্তানের একজনের নাম রাখা হয়েছে ‘হাসান ওসমান’ এবং অপরজনের ‘হোসাইন হাদি’।
জহুর আলম শহীদ হাদিকে চিরকালের অনুপ্রেরণা হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তার সন্তানদের শহীদ হাদির নামে পরিচয় দিতে পেরে তিনি গর্বিত। শহীদ ওসমান হাদি আধিপত্যবিরোধী আন্দোলনের একজন বিশিষ্ট নেতা ছিলেন।
শরিফ ওসমান হাদি ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট রোডে রিকশায় থাকা অবস্থায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন। আহত অবস্থায় তাকে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের একটি হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর মারা যান। ১৯ ডিসেম্বর সিঙ্গাপুর থেকে তার মরদেহ দেশে আনা হয়।
শহীদ হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হয় ২০ ডিসেম্বর দুপুর আড়াইটায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়। জানাজায় লাখো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। এরপর তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে সমাহিত করা হয়।
শহীদ শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে দেশব্যাপী শোকের ছায়া নেমে আসে। তার স্মৃতিতে জন্ম নেওয়া যমজ সন্তানদের নামকরণ স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক মহলে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এটি একই সঙ্গে শহীদ নেতার প্রতি সশস্ত্র আন্দোলনের স্মৃতিচারণ ও নতুন প্রজন্মকে তাঁর আদর্শের সঙ্গে পরিচয় করানোর একটি প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জহুর আলম ও তার পরিবার আশা প্রকাশ করেছেন যে, শহীদ হাদির নামে পরিচিত এই দুই নবজাতক ভবিষ্যতে সমাজে ইতিবাচক ও মানবিক মূল্যবোধের প্রবর্তক হিসেবে গড়ে উঠবে। এই নামকরণ দেশব্যাপী রাজনৈতিক ও সামাজিক আন্দোলনের ইতিহাসে এক অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।