প্রবাস ডেস্ক
গ্রিসের গাভদোস উপকূলে একটি মাছ ধরার নৌকা থেকে শুক্রবার ভোরে ৫৩৯ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে, যাদের মধ্যে ৪৩৭ জন বাংলাদেশি বলে স্থানীয় কোস্টগার্ড (লিমেনার্কিও) কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে চারজন নারী ও দুটি শিশু রয়েছে, বাকি বেশিরভাগই পুরুষ। বর্তমানে তারা রেথিম্নোর কিত্রেনোসি ভবনে কোস্টগার্ডের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে, যেখানে তাদের নিবন্ধন ও পরিচয় শনাক্তকরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে।
রেথিম্নোর কোস্টগার্ড প্রধান কিরিয়াকোস পাত্তাকোস জানান, উদ্ধারকৃত অভিবাসীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে এবং পরবর্তী ধাপে মানবপাচারকারী চক্র সনাক্ত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু হবে। তিনি বলেন, অভিবাসীদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়াই বর্তমানে প্রধান লক্ষ্য।
রেথিম্নো পৌরসভার উপমেয়র (নাগরিক সুরক্ষা) ইয়োরগোস স্কোরদিলিস জানান, এত বিপুলসংখ্যক অভিবাসী সামলানোর পর্যাপ্ত অবকাঠামো রেথিম্নোতে নেই। স্থানীয় প্রশাসন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের ঘাটতির কারণে চাপের মুখে পড়েছে। আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে সোমবার ৩০০ জন অভিবাসীকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে এবং বাকিদের আগামী সপ্তাহে পাঠানো হবে।
উদ্ধারকৃতদের জাতীয়তা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশি ৪৩৭ জন ছাড়াও ৪৬ জন পাকিস্তানি, ৩৪ জন মিসরীয়, ১২ জন ইরিত্রীয় (যাদের মধ্যে চারজন নারী ও দুই শিশু), ৫ জন সোমালি এবং সুদান, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনের নাগরিক রয়েছেন। কর্তৃপক্ষের ধারণা, মানবপাচারকারীদের সহায়তায় তারা লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল থেকে অন্তত ৩৬ ঘণ্টার ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রযাত্রা পাড়ি দিয়ে গ্রিসে পৌঁছেছেন।
এ ঘটনার পর গ্রিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত নাহিদা রহমান সুমনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, এ বিষয়ে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো তথ্য তাদের কাছে পৌঁছায়নি। তবে তিনি যোগ করেন, প্রয়োজনীয় তথ্য এবং সহায়তার জন্য দূতাবাস পর্যবেক্ষণ অব্যাহত রাখছে।
ঘটনাটি ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক অভিবাসন সংকটের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে লিবিয়া ও মধ্যপ্রাচ্য থেকে ইউরোপে অনিয়মিত অভিবাসন বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন বিপুলসংখ্যক অভিবাসীর নিরাপদ এবং মানবিক হ্যান্ডলিং নিশ্চিত করতে উপযুক্ত অবকাঠামো, কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় প্রশাসনের কার্যকর সমন্বয় অপরিহার্য। পাশাপাশি, মানবপাচারকারীদের শনাক্ত ও দমন করাও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।