খেলাধুলা ডেস্ক
লা লিগায় শিরোপা দৌড়ে অবস্থান আরও মজবুত করেছে বার্সেলোনা। রোববার ভিয়ারিয়ালের ঘরের মাঠে ১০ জনের দলের বিপক্ষে ২–০ গোলের জয় তুলে নিয়ে শীর্ষে থাকা ব্যবধান আবার চার পয়েন্টে বাড়িয়েছে কাতালান ক্লাবটি। এর আগের দিন জয় পেয়ে শীর্ষের সঙ্গে ব্যবধান এক পয়েন্টে নামিয়ে এনেছিল রিয়াল মাদ্রিদ।
ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলতে থাকে বার্সেলোনা। ১২তম মিনিটেই এগিয়ে যায় সফরকারীরা। বক্সের ভেতরে রাফিনহাকে ফাউল করে বসেন ভিয়ারিয়ালের মিডফিল্ডার সান্তি কোমেসানা। পেনাল্টি থেকে নির্ভুল শটে গোল করেন রাফিনহা। লুইস জুনিয়রকে ভুলদিকে পাঠিয়ে নিচু ড্রাইভে জাল কাঁপান ব্রাজিলিয়ান এই ফরোয়ার্ড। এটি ছিল তার শেষ তিন লিগ ম্যাচে চতুর্থ গোল।
প্রথমার্ধে ভিয়ারিয়াল কিছুটা চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করলেও গোলের সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি। নিকোলাস পেপে কাছ থেকে হেড করলেও বল পোস্টের বাইরে যায়। আয়োজে পেরেজের নেওয়া শট বার্সার গোলরক্ষক হোয়ান গার্সিয়ার দক্ষতায় প্রতিহত হয়। এসব সুযোগ নষ্ট করার খেসারত দিতে হয় স্বাগতিকদের।
এরপর ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় বিরতির ঠিক আগে। ইয়ামালকে ফাউল করার ঘটনায় লাল কার্ড দেখেন ভিয়ারিয়ালের ডিফেন্ডার ভেইগা। ১০ জনের দলে পরিণত হওয়ার পর ভিয়ারিয়ালের রক্ষণ আরও চাপে পড়ে। প্রথমার্ধের বাকি সময়ে ব্যবধান বাড়াতে বেশ কয়েকটি সুযোগ তৈরি করলেও রাফিনহার ২০ গজ দূর থেকে নেওয়া শক্তিশালী শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে।
দ্বিতীয়ার্ধে একজন কম নিয়ে খেলতে থাকা ভিয়ারিয়াল মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ হারাতে থাকে। যদিও এক পর্যায়ে স্বাগতিকরা সমতা ফেরানোর আশা দেখেছিল। বার্সার ডিফেন্ডার জুলেস কোন্দের নিচু ক্রস আত্মঘাতী হয়ে জালে জড়ালেও অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল ঘোষণা করেন সহকারী রেফারি।
৬৩তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বার্সেলোনা। বক্সের ভেতরের জটলার মধ্যে ফ্রেঙ্কি ডি ইয়াংয়ের বাড়ানো বল থেকে গোল করেন কিশোর তারকা লামিনে ইয়ামাল। এটি ছিল তার শেষ পাঁচ লিগ ম্যাচে তৃতীয় গোল। এই গোলের পর ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি চলে যায় বার্সেলোনার হাতে।
গোলরক্ষক হোয়ান গার্সিয়া একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সেভ করে দলকে স্বস্তিতে রাখেন। জর্জেস মিকাউতাজে ও সার্জি কার্দোনার প্রচেষ্টা একের পর এক প্রতিহত করেন তিনি। বদলি হিসেবে নামা মার্কাস র্যাশফোর্ড দুটি সুযোগ পেলেও গোল করতে ব্যর্থ হন।
এই জয়ের মধ্য দিয়ে বার্সেলোনা টানা অষ্টম লিগ ম্যাচে জয় পেল এবং ১৮ ম্যাচে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগার শীর্ষে বছর শেষ করল। সমান ম্যাচে ৪২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। তৃতীয় স্থানে থাকা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ শীর্ষের থেকে ৯ পয়েন্ট পিছিয়ে পড়েছে, ফলে বর্তমান অবস্থায় শিরোপা লড়াই মূলত দুই দলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
নতুন কোচ হ্যান্সি ফ্লিকের অধীনে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বার্সেলোনার আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে। আক্রমণভাগে রাফিনহা ও ইয়ামালের কার্যকারিতা এবং রক্ষণে সংগঠিত খেলাই তাদের সাফল্যের প্রধান ভিত্তি হয়ে উঠছে। লিগের পরবর্তী অংশে এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারলে শিরোপা দৌড়ে বার্সেলোনা আরও শক্ত অবস্থানে পৌঁছাতে পারে।