1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৩৬ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
মনোনয়ন না পেলে আগেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত দলের হাইকমান্ডকে জানিয়েছি : রুমিন ফারহানা তারেক রহমান এভারকেয়ার হাসপাতালে, চিকিৎসাধীন মায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে ঢাকা-১৫ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’: তারেক রহমান আল্লাহই ক্ষমতা ও সম্মানের অধিকারী : তারেক রহমান রাতের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি পর্যন্ত কমতে পারে, ঘন কুয়াশা হতে পারে জিদানের ছেলেকে নিয়ে আবেগঘন মুহূর্তে আলজেরিয়ার জয় তারেক রহমানের অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে আগমন, এনসিপি নেতার স্বাগত ঢাকায় পৌঁছেই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ফোনালাপে তারেক রহমান তারেক রহমানের সাথে দেশে ফিরেছে তার পছন্দের বিড়াল ‘জেবু’

‘আই হ্যাভ এ প্ল্যান’: তারেক রহমান

রিপোর্টার
  • আপডেট : বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ০ বার দেখা হয়েছে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

ঢাকা, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাজনৈতিক ঐক্য, শান্তি ও উন্নয়নকে ভিত্তি করে একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার ‘পরিকল্পনা’ ঘোষণা করেছেন। রাজধানীর ৩০০ ফিট এলাকায় আয়োজিত এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক অধিকার আন্দোলনের নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রের ঐতিহাসিক উক্তি “আই হ্যাভ এ ড্রিম” স্মরণ করে বলেন, সেই ধারাবাহিকতায় তিনি ঘোষণা দিচ্ছেন—“আই হ্যাভ এ প্ল্যান”। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তিনি দলীয় নেতাকর্মী, দেশবাসী এবং সমমনা রাজনৈতিক শক্তিগুলোকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

বুধবার বিকেলে অনুষ্ঠিত এই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন সমমনা রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তারেক রহমান বলেন, “আজকের এই মঞ্চে শুধু বিএনপির নেতা নয়, দেশের গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতায় বিশ্বাসী একাধিক রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত আছেন। এটি প্রমাণ করে—দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণে আমরা একা নই, বরং সম্মিলিত শক্তি হিসেবে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে।”

তারেক রহমান তার বক্তব্যের শুরুতে মার্টিন লুথার কিং-এর আন্দোলন ও নেতৃত্বের আদর্শ তুলে ধরে বলেন, একটি স্বপ্ন যেমন জনগণকে আন্দোলিত করতে পারে, তেমনি একটি বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথকে সুগম করতে পারে। তিনি বলেন, “দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমার পরিকল্পনার মূল ভিত্তি। আমি এমন একটি বাংলাদেশ দেখতে চাই, যেখানে মানুষের ভোটাধিকার, বাক্‌স্বাধীনতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত থাকবে, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে, এবং প্রতিটি নাগরিক সমান সুযোগ ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচবে।”

বিএনপির এই শীর্ষ নেতা আরও বলেন, রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য গড়ে তোলার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। “দেশে রাজনৈতিক বিভাজন থাকবে, কিন্তু সেই বিভাজন যেন সংঘাত ও সহিংসতায় রূপ না নেয়। আমরা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা চাই, কিন্তু শত্রুতা নয়। উন্নয়নের রাজনীতিতে আমরা প্রতিযোগিতা করব, কিন্তু পরাজিত পক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার মানসিকতা যেন আর না থাকে,” বলেন তিনি।

৩০০ ফিট এলাকার এই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে জনসমাগম ছিল উল্লেখযোগ্য। তারেক রহমান জনতার উদ্দেশে বলেন, “আমি আপনাদের স্বপ্নকে সম্মান করি, কিন্তু শুধু স্বপ্নে থেমে থাকলে চলবে না। স্বপ্নকে বাস্তবায়নে পরিণত করতে একটি পরিকল্পনা দরকার, সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দরকার ঐক্য, শৃঙ্খলা, দায়িত্বশীলতা এবং দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি।”

তিনি বলেন, তার পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন নির্ভর করবে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা, জনগণের অংশগ্রহণ এবং প্রশাসনিক কাঠামোর সংস্কারের ওপর। “দেশকে এগিয়ে নিতে আমাদের প্রয়োজন দক্ষ মানবসম্পদ, যুগোপযোগী নীতিকাঠামো, শক্তিশালী অর্থনীতি, প্রযুক্তিগত রূপান্তর এবং গণমুখী শাসনব্যবস্থা,” বলেন তিনি।

তারেক রহমান জাতীয় অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, দেশে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল রাখা, রপ্তানি খাতকে বহুমুখীকরণ করা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের (এসএমই) জন্য প্রণোদনা সম্প্রসারণ তার পরিকল্পনার অন্যতম অগ্রাধিকার। “যুব সমাজকে দক্ষতা-ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দিয়ে কর্মবাজারে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে নিতে হবে। বেকারত্ব কমাতে সরকারি–বেসরকারি সমন্বয়ে বৃহৎ কর্মসংস্থান প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে,” বলেন তিনি।

দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অবকাঠামো হবে টেকসই, অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক এবং নাগরিক সুবিধাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নির্মিত। মেগা প্রকল্পের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামীণ সড়ক, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি অবকাঠামো উন্নয়নেও সমান গুরুত্ব দিতে হবে।”

শিক্ষা খাত সংস্কার প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, “শিক্ষা ব্যবস্থা হতে হবে কর্মমুখী, গবেষণা–উদ্ভাবন–নির্ভর এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। শুধু ডিগ্রি নয়, দক্ষতাই হবে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের কর্মসংস্থানের মূল চালিকাশক্তি।” তিনি কারিগরি, বিজ্ঞান, তথ্যপ্রযুক্তি, স্বাস্থ্য ও কৃষি–গবেষণায় বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গবেষণা–অনুদান সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়ন নিয়ে তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যসেবা হতে হবে সহজলভ্য, সাশ্রয়ী এবং মানসম্মত। সরকারি হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, চিকিৎসক–নার্স–স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও নিয়োগ বৃদ্ধি, এবং ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ প্রয়োজন।”

কৃষি খাত নিয়ে তারেক রহমান বলেন, “কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত, সেচ–সার–বীজ–ঋণ–সহায়তা সহজ করা, কৃষি–যান্ত্রিকীকরণে ভর্তুকি বৃদ্ধি, এবং খাদ্য–নিরাপত্তাকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।” তিনি বলেন, দেশে কোল্ড–স্টোরেজ, কৃষি–প্রক্রিয়াজাত শিল্প এবং কৃষিপণ্য রপ্তানিতে আধুনিক সাপ্লাই–চেইন ব্যবস্থা গড়ে তোলা জরুরি।

পরিবেশ, জলবায়ু ও নগরায়ণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “নগর উন্নয়ন হবে পরিবেশ–সম্মত, জনবান্ধব এবং জলবায়ু–ঝুঁকি–সহনশীল। ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে বায়ুদূষণ–নিয়ন্ত্রণ, জলাবদ্ধতা–সমাধান, বর্জ্য–ব্যবস্থাপনা আধুনিকীকরণ এবং গণপরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।”

আইনশৃঙ্খলা ও বিচারব্যবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আইনের শাসন ছাড়া কোনো পরিকল্পনা টেকসই হয় না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও বিচার বিভাগকে দলীয় প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। ন্যায়বিচার হবে দ্রুত, নিরপেক্ষ এবং সাধারণ মানুষের নাগালে।”

গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সংস্কারের প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, “নির্বাচন ব্যবস্থা হবে স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য। নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনে সক্ষম করে তুলতে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার প্রয়োজন।”

তারেক রহমান আন্তর্জাতিক সম্পর্ক প্রসঙ্গে বলেন, “বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি হবে ভারসাম্যপূর্ণ, স্বাধীন এবং অর্থনৈতিক কূটনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়ে পরিচালিত। আঞ্চলিক সহযোগিতা, বাণিজ্য–সম্প্রসারণ, রেমিট্যান্স প্রবাহ–বৃদ্ধি এবং আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ–আকর্ষণ হবে মূল লক্ষ্য।”

বক্তব্যের শেষ পর্যায়ে তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণ ও সুন্দর বাংলাদেশ গড়া সম্ভব, যদি আমরা বিভেদ ভুলে জাতীয় স্বার্থে একসঙ্গে কাজ করি। আমার পরিকল্পনা কোনো ব্যক্তি বা দলের একার নয়—এটি হবে জনগণের পরিকল্পনা, দেশের পরিকল্পনা।”

তিনি বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “রাজনীতি হবে শান্তিপূর্ণ, শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং দায়িত্বশীল। জনগণের আশা–আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করে কাজ করতে হবে।”

গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষ হয় জাতীয় উন্নয়ন, গণতন্ত্র, ঐক্য ও শান্তির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করার মধ্য দিয়ে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com