নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক দল ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রস্তুতি জোরালো হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসন থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের পক্ষে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) আগারগাঁওয়ে অবস্থিত সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তার দপ্তর থেকে এ মনোনয়নপত্র গ্রহণ করা হয়।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং ঢাকা-১৩ ও ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. ইউনুচ আলী। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার জামায়াতে ইসলামীর আমিরের পক্ষে ঢাকা-১৫ আসনের জন্য মনোনয়নপত্র নেওয়া হয়েছে।
নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থী কিংবা তাদের অনুমোদিত প্রতিনিধিরা আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তা বা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারবেন। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে মনোনয়নপত্র জমা, যাচাই-বাছাই এবং পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করা হবে।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তফসিল ঘোষণার পর গত ১১ ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকা-১৫ সংসদীয় আসন থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে অন্তত ১২ জন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। এদের মধ্যে বিএনপির শফিকুল ইসলাম খান মিল্টন অন্যতম। একই আসনে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের আগ্রহী প্রার্থীরাও মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে একই দিনে ঢাকা-১৩ সংসদীয় আসন থেকেও একাধিক রাজনৈতিক দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। ঢাকা-১৩ আসন থেকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম)-এর চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেন। ফলে রাজধানীর এই দুটি গুরুত্বপূর্ণ আসনে নির্বাচনি প্রতিযোগিতা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা বাড়ছে।
নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ঢাকা-১৩ ও ঢাকা-১৫—এই দুই সংসদীয় আসন থেকে মোট ২১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। আগামী কয়েক দিনে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, কারণ সময়সীমা শেষ হতে এখনো কয়েক দিন বাকি রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ঢাকা-১৩ ও ঢাকা-১৫ আসন দুটি রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় বিভিন্ন দল এসব আসনে শক্ত অবস্থান তৈরির চেষ্টা করছে। বড় দলগুলোর পাশাপাশি মাঝারি ও ছোট দল এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের অংশগ্রহণে ভোটের মাঠ বহুমাত্রিক রূপ নিতে পারে। এতে করে নির্বাচনি প্রচারণা ও রাজনৈতিক তৎপরতা আরও গতিশীল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইন অনুযায়ী সব প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের পর বৈধ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে এবং পরে প্রতীক বরাদ্দসহ নির্বাচনের পরবর্তী ধাপগুলো সম্পন্ন করা হবে।
তফসিল অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হলে ঢাকা-১৩ ও ঢাকা-১৫ আসনে ভোটারদের অংশগ্রহণ এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাত্রা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে বাড়তি নজর থাকবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।