1. admin@deshmediabd.info : admin :
  2. support@bdsoftinc.info : adminr :
বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৭ অপরাহ্ন
সর্বশেষ সংবাদঃ
জাতীয় সংসদ ভবনে তারেক রহমানের সঙ্গে নেপাল ও ভুটানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাক্ষাৎ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের তারেক রহমানের হাতে শোকবার্তা হস্তান্তর বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন লাখো জনতার ঢলে আপোষহীন নেত্রী চিরনিদ্রায় শায়িত হলফনামায় জামায়াত নায়েবে আমির ডা. তাহেরের সম্পদ ১.৮৫ কোটি আর তার স্ত্রীর সম্পদ ৫.৫০ কোটি নাহিদ ইসলামের নির্বাচনি হলফনামায় মোট সম্পদ ৩০ লাখ টাকা খালেদা জিয়ার স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অবদান প্রশংসিত : সাংবাদিক ডেভিড বার্গম্যান বেগম খালেদা জিয়ার মরদেহ জানাজার জন্য মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে পৌঁছেছে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছে ৫১ দল নির্বাচনি হলফনামায় হাসনাত আবদুল্লাহর মোট সম্পদ ৫০ লাখ

বেগম খালেদা জিয়ার জানাজা সম্পন্ন লাখো জনতার ঢলে

রিপোর্টার
  • আপডেট : বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৫
  • ৯ বার দেখা হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

ঢাকা, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ — সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নামাজে জানাজা আজ বুধবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা ও মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিকেল ৩টা ৪ মিনিটে শুরু হওয়া এই জানাজায় লাখো মানুষের অংশগ্রহণে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এটি এক বিরল ও আবেগঘন মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মুহাম্মদ আবদুল মালেক জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন। এতে উপস্থিত ছিলেন খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পরিবারের সদস্যরা, বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা, রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ এবং কূটনৈতিক ও বিদেশি অতিথিরা। পুরো জানাজার আয়োজন ও পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা। এ ছাড়া প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর প্রধানগণও জানাজায় অংশ নেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও এই জানাজায় উপস্থিত হয়ে শোক প্রকাশ করেন।

সরেজমিন পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, দুপুরের অনেক আগেই মানিক মিয়া অ্যাভিনিউসহ আশপাশের প্রধান সড়কগুলো মানুষের ভিড়ে পূর্ণ হয়ে যায়। শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, ধানমন্ডি ২৭, কারওয়ান বাজার, মিরপুর, মগবাজার ও জাহাঙ্গীর গেইট পর্যন্ত মানুষের কাতার ছড়িয়ে পড়ে। জানাজার নির্ধারিত স্থানে জায়গা না পেয়ে বহু মানুষ আশপাশের ভবনের গ্যারেজ, গলি, ফাঁকা জায়গা ও সড়কের সংযোগস্থলগুলোতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নামাজে অংশ নেন। কেউ ট্রাক, বাস ও ট্রেনযোগে, আবার অনেকে দূরদূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে এসে জানাজায় শামিল হন।

জানাজার আগে খালেদা জিয়ার মরদেহ গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে আনা হয়। ভোর থেকেই সংসদ ভবনসংলগ্ন এলাকায় মানুষের সমাগম শুরু হয়, যা সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও বিস্তৃত হয়। মানুষের হাতে কালো ব্যাজ, অনেকের চোখে অশ্রু, আবার কারও মুখে ছিল গভীর শোকের ছাপ। নেতাকর্মী থেকে সাধারণ নাগরিক—সব শ্রেণির মানুষের উপস্থিতি জানাজাকে পরিণত করে এক ঐতিহাসিক গণসমাবেশে।

জানাজা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পুলিশের পাশাপাশি আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সেনাবাহিনী মোতায়েন ছিল। জানাজার নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় ১০ হাজারের বেশি সদস্য দায়িত্ব পালন করেন। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ, জনসমাগম ব্যবস্থাপনা ও জরুরি সেবার জন্য বিশেষ প্রস্তুতি রাখা হয়।

খালেদা জিয়া ১৯৪৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে তিনি তিন দফায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে তার অবস্থান, দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম, কারাবরণ, অসুস্থতার মধ্যেও নেতৃত্ব ধরে রাখা এবং জাতীয় রাজনীতিতে তার ভূমিকা তাকে দেশের অন্যতম আলোচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে। তার নেতৃত্বে বিএনপি বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিল এবং তার সময়ে অর্থনীতি, অবকাঠামো, শিক্ষাসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারমূলক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

তার মৃত্যুতে দেশজুড়ে শোকের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক মহলের বাইরে সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও তার প্রয়াণ গভীর প্রভাব ফেলেছে, যার প্রতিফলন দেখা গেছে জানাজায় মানুষের বিপুল উপস্থিতিতে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই জানাজা শুধু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং বাংলাদেশের রাজনীতির এক অধ্যায়ের আবেগঘন সমাপ্তি ও স্মরণীয় বিদায়ের সাক্ষ্য বহন করছে।

জানাজা শেষে খালেদা জিয়ার মরদেহ দাফনের জন্য নির্ধারিত গন্তব্যে নেওয়া হয়। তার স্মৃতি ও রাজনৈতিক উত্তরাধিকার নিয়ে আগামী দিনগুলোতেও জাতীয় রাজনীতিতে আলোচনা অব্যাহত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

s
এই বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2021 deshmediabd.com