জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, প্রশাসনে পক্ষপাতিত্ব এবং রাজনৈতিক যোগাযোগের কারণে বাংলাদেশে অব্যাহত রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, “প্রশাসনে কিছু ব্যক্তি এখনো বিএনপি, জামায়াত এবং আওয়ামী লীগের পন্থি আচরণ করছেন, যা ভবিষ্যতে দেশকে বড় সংকটে ফেলতে পারে।”
কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে এনসিপির সমন্বয় সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সারজিস আলম এসব মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, “এই অভ্যুত্থানের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জনগণ আগে কখনও দেখেনি, কিন্তু ভবিষ্যতে যদি প্রশাসন একইভাবে পক্ষপাতিত্ব করে চলে, তাহলে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।”
এনসিপি নেতা পরিষ্কার ভাষায় বলেন, “যদি এনসিপি রাজনৈতিকভাবে রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়, তাহলে শুধু রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়, আমরা স্বেচ্ছাচারী নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের আন্দোলনেও অংশ নেব।” তাঁর দাবি, নির্বাচন কমিশন এবং প্রশাসন যদি নিজেদের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ বন্ধ না করে, তাহলে আগামী নির্বাচন এক ধরনের অনিশ্চয়তায় পড়বে।
সারজিস আলম আরও বলেন, “আমরা মনে করি, প্রশাসন যদি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াতের পক্ষের ভূমিকা পালন করতে থাকে, তাহলে দেশের স্থিতিশীলতা ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।” তিনি দেশের গুরুত্বপূর্ণ আদালত এবং প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগের প্রভাবের কথা তুলে ধরে বলেন, “হাইকোর্টে অনেক আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ব্যক্তির উপস্থিতি রয়েছে, যারা প্রয়োজনীয় মামলায় জামিন দিয়ে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কাজ করছে।”
এনসিপি নেতা বলেন, “আমরা শুধু ক্ষমতা অর্জন করতে চাই না, আমরা চাই বাংলাদেশের জন্য স্থিতিশীল একটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং ন্যায়বিচার। যদি প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আগামী বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা আরও বাড়বে।”
তিনি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, “আগামী বাংলাদেশে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন, মৌলিক সংস্কার এবং বিচারিক প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য বিএনপি বা জামায়াত এককভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবে না। এতে এনসিপির অংশগ্রহণ আবশ্যক।”
এনসিপি নেতা নির্বাচনী আচরণ নিয়ে আরও বলেন, “আইনগতভাবে শাপলা প্রতীক পেতে আমাদের কোনো বাধা নেই, কিন্তু নির্বাচন কমিশন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে এবং নিজেদের স্বাধীনতা প্রদর্শন করতে পারছে না। যদি তারা এভাবে চলে, তবে আগামী নির্বাচনে তাদের প্রতি আমাদের আস্থা থাকবে না।”
কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সদস্যসচিব আহনাফ সাঈদ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমন্বয় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল্লাহ হায়দার, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির, দিদার শাহ প্রমুখ।
সারজিস আলম সভায় আরও ঘোষণা দেন, “আগামী ১৫ দিনের মধ্যে জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হবে, এবং ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন সম্পন্ন করা হবে।”
এনসিপির নেতা কার্যকর রাজনীতি এবং সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য একটি স্বচ্ছ, পক্ষপাতমুক্ত প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনের প্রয়োজনীয়তা 강조 করেছেন।