কুষ্টিয়ায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলন চলাকালে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফসহ চারজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের শুনানি আজ অনুষ্ঠিত হবে।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী এর নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি বিচারিক প্যানেল এ শুনানি পরিচালনা করবে। অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।

আজকের শুনানির শুরুতেই মাহবুবউল আলম হানিফ সহ পলাতক চার আসামির বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ গঠন করা হবে। এর পর বিচারকের কাছে তাদের বিচারের জন্য আবেদন জানানো হবে। তবে, যদি আসামিপক্ষের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স আইনজীবী উপস্থিত না থাকেন, তাহলে পরবর্তী আদেশ বা সিদ্ধান্ত প্রদান করা হবে। প্রসিকিউশন এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

গত ২৩ অক্টোবর, চার আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করার পর ট্রাইব্যুনালে তাদের উপস্থিতি দাবি করা হয়েছিল। তবে, পলাতক থাকায় আইনানুযায়ী তাদের পক্ষে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আজকের দিনটি অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য নির্ধারিত হয়েছে।

হানিফ ছাড়াও এই মামলায় অভিযুক্ত অন্যান্য আসামির মধ্যে রয়েছেন **কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সদর উদ্দিন খান, আজগর আলী (জেলা সাধারণ সম্পাদক), এবং আতাউর রহমান আতা (শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক)।

গত ১৪ অক্টোবর, ট্রাইব্যুনাল-২ এই চারজনকে উপস্থিত হতে নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু তারা হাজির না হওয়ায়, জাতীয় দৈনিক দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে তাদের গ্রেপ্তারের জন্য আদেশ দেওয়া হয়। এরপর, প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন।

এর আগে, ৬ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ হানিফসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয়। এই অভিযোগে তিনটি সুনির্দিষ্ট বিষয় উঠে আসে:

১. উসকানিমূলক বক্তব্য,
২. ষড়যন্ত্র, এবং
৩. কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যার ঘটনা।

এই হত্যাকাণ্ডটি জুলাই-আগস্ট আন্দোলন এর সময়ে ঘটেছিল, যেখানে ছয়জন নিহত হন এবং বেশ কয়েকজন আহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতে হাসানুল হক ইনু এবং মাহবুবউল আলম হানিফসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে।

মামলাটি চলমান থাকায়, তদন্ত সংস্থা তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে এবং আরও তদন্ত চলমান রয়েছে। তবে আজকের শুনানির পর ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

এই মামলায় প্রমাণিত হলে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য কঠোর শাস্তির দাবি করা হতে পারে, যা জনমনে একটি বড় বার্তা প্রেরণ করবে।