জাতীয় ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সদস্যদের অভিনন্দন জানিয়েছেন, যা ক্রিয়াশীল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বিরামহীন বৈঠক ও সংলাপের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ তৈরি ও বাস্তবায়নের রূপরেখা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন ২০২৫ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে সভাপতি করে যাত্রা শুরু করে। কমিশনের মেয়াদ শেষ হয় ৩১ অক্টোবর। প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জুলাই জাতীয় সনদ বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি ঐতিহাসিক অর্জন। এটি আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি এবং জাতীয় রাজনীতির সুসংহত উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, “এই সনদ আমাদের জাতীয় জীবনে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে নতুন দিক নির্দেশক হবে। এটি ভবিষ্যতে স্বৈরাচারী প্রবণতা প্রতিরোধ এবং নাগরিক অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় ভূমিকা রাখবে। মূলত, এই উদ্যোগ সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশি রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে সম্পন্ন হয়েছে, কোনো বিদেশি মধ্যস্থতাকারীর অংশগ্রহণ ছাড়াই।”
তিনি আরও বলেন, “বিগত সময়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংলাপে প্রায়শই বিদেশি প্রতিনিধিরা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় ছিলেন। তবে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দেশীয় রাজনৈতিক দলগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে একমত হয়েছে যে জাতীয় সংকটের সমাধান দেশীয়ভাবে করতে হবে। এই প্রক্রিয়ায় সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করেছে এবং সমাধানের পথ দেখিয়েছে।”
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ, সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক ও ড. মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া এবং বিশেষ সহকারী মনির হায়দারকে প্রধান উপদেষ্টা ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এছাড়া গণমাধ্যমকর্মীদেরও ধন্যবাদ জানান, যারা দীর্ঘ আলোচনার কার্যক্রম মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতীত ১৫ মাসে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ফ্যাসিবাদী চক্রান্ত প্রতিহত করতে এবং দেশের স্থিতিশীলতা রক্ষায় জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য।”
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণের জন্য সব রাজনৈতিক দল ও পক্ষের মধ্যে ঐক্য থাকা প্রয়োজন। “চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা একক ব্যক্তি, সংগঠন বা সরকারের দ্বারা সম্ভব নয়; একমাত্র রাজনৈতিক ঐক্যই দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পারে,” প্রধান উপদেষ্টা বলেন।
জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের কার্যক্রম দেশের রাজনৈতিক সংলাপকে নতুন দিক নির্দেশনা দিয়েছে। জুলাই জাতীয় সনদ দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি দৃঢ় করতে একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।