জাতীয় ডেস্কঃ
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন, আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর অটোমেটেড ভূমিসেবা চালুর ফলে এখন নাগরিকরা সহজে, দ্রুত ও স্বচ্ছতার সঙ্গে বিভিন্ন ভূমিসংক্রান্ত সেবা পাচ্ছেন। তিনি জানান, সরকারের এই উদ্যোগের লক্ষ্য হলো জনগণের দোরগোড়ায় ভূমিসেবা পৌঁছে দেওয়া এবং প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের কম্পিউটার ল্যাবে আয়োজিত ‘মনোনীত অটোমেটেড ভূমিসেবা সম্পর্কিত টিওটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায়’ তিনি এ কথা বলেন। রংপুর বিভাগের চারটি জেলা—রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম—এবং খুলনা বিভাগের কুষ্টিয়া জেলার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এ প্রশিক্ষণে অংশ নেন।
দুই দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) থেকে শুরু করে কম্পিউটার অপারেটর পদমর্যাদার মোট ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটির আয়োজন করে ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প।
এএসএম সালেহ আহমেদ বলেন, ভূমি একটি দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের অন্যতম প্রধান উপাদান। ভূমির সঠিক ব্যবস্থাপনা, সংরক্ষণ ও নাগরিকদের সহজলভ্য সেবা নিশ্চিত করা সরকারের মৌলিক দায়িত্বগুলোর একটি। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলা এবং জনবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ভূমিসেবা প্রায় সম্পূর্ণভাবে ডিজিটাল রূপ নিয়েছে। নাগরিকরা ঘরে বসেই অনলাইনে বিভিন্ন ভূমিসংক্রান্ত সেবা যেমন নামজারি, খাজনা পরিশোধ ও রেকর্ড যাচাই করতে পারছেন। এই ডিজিটাল সেবা ব্যবস্থার ফলে সেবাগ্রহীতারা সময়, খরচ ও হয়রানি থেকে মুক্ত হচ্ছেন।
সিনিয়র সচিব জানান, “ভূমি সেবা এখন নাগরিকের দোরগোড়ায়” — এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ভূমি মন্ত্রণালয় নিরলসভাবে কাজ করছে। দেশের প্রতিটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নাগরিক ভূমিসেবা কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে, যাতে জনগণ সরাসরি এসে প্রয়োজনীয় সেবা নিতে পারেন। প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, স্বচ্ছতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে ভূমি প্রশাসনকে জনগণের কাছে আরও জবাবদিহিমূলক করে তুলতে সরকারের উদ্যোগ অব্যাহত রয়েছে। ভূমিসেবা অটোমেশন প্রকল্পের মাধ্যমে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে ভূমি রেকর্ড ও সেবা প্রদানের মান উন্নত করা হচ্ছে, যা ভবিষ্যতে জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. এমদাদুল হক চৌধুরী। প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী পর্বে তিনি অংশগ্রহণকারী কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, আধুনিক ভূমিসেবা ব্যবস্থার সফল বাস্তবায়নে মাঠ প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভূমি সেবার ডিজিটাল রূপান্তর সরকারি সেবা প্রদানের পদ্ধতিতে একটি বড় পরিবর্তন এনেছে। এই উদ্যোগের ফলে দুর্নীতি ও জটিলতা কমবে এবং ভূমি প্রশাসনের প্রতি জনগণের আস্থা আরও বৃদ্ধি পাবে।