অনলাইন ডেস্ক
বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়া আবারও শর্ত জুড়ে দিয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে বন্ধ থাকা এই শ্রমবাজার পুনরায় চালু করার লক্ষ্যে মালয়েশিয়া সরকারের তরফ থেকে ১০টি শর্ত প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে, এসব শর্তের কারণে সিন্ডিকেটের প্রভাব ফের সক্রিয় হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, এই শর্তগুলো পুরোনো সিন্ডিকেটকে আইনি বৈধতা দিতে পারে, যা শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।
গত ৩১ মে, ২০২৩-এ বাংলাদেশ থেকে নতুন কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দেয় মালয়েশিয়া, যার পেছনে মূল কারণ ছিল সিন্ডিকেটের দুর্নীতি ও অনিয়ম। তবে এখন ৭ নভেম্বর ২০২৩ এর মধ্যে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে ইচ্ছুক রিক্রুটিং এজেন্সির তালিকা জমা দেওয়ার জন্য একটি চিঠি পাঠিয়েছে দেশটির মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়। শর্তগুলো হল:
এছাড়া, রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য এই শর্তগুলো পূরণ করা অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে। বিশেষ করে, বেশিরভাগ রেকর্ড করা এজেন্সিগুলোরই ৩ হাজার কর্মী পাঠানোর অভিজ্ঞতা নেই, যা মালয়েশিয়া সরকারের শর্ত পূরণের জন্য প্রয়োজনীয় একটি গুণ।
বায়রা (বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সি) এর সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেছেন, “মালয়েশিয়া সরকারের শর্তগুলো বাস্তবসম্মত নয় এবং এটি পুরোনো সিন্ডিকেটকে বৈধ করার একটি চেষ্টা। মালয়েশিয়া সরকারের এ ধরনের শর্ত বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সির পক্ষে পূরণ করা অসম্ভব হতে পারে।”
এছাড়া, এই শর্তের কারণে রিক্রুটিং এজেন্সির খরচ বাড়বে, এবং বেসরকারি সিন্ডিকেটগুলো এর মাধ্যমে আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সক্ষম হবে। একদিকে, শ্রমিকদের খরচ বেড়ে যাবে, অন্যদিকে, এসব শর্ত নতুনভাবে সিন্ডিকেট ব্যবসাকে জোরদার করতে সাহায্য করবে।
২০১৮ সালে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে মালয়েশিয়া বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেয়া বন্ধ করে দেয়। এরপর, ২০২১ সালে ডিসেম্বরে নতুন সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার পুনরায় খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু, পুরোনো সিন্ডিকেটের প্রভাব এড়িয়ে যাচাই-বাছাই করে শ্রমিক নিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব ছিল। যদিও গত বছরের ৩১ মে তারিখ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়োগ পুনরায় বন্ধ রয়েছে।
এখন মালয়েশিয়ার নতুন শর্ত নিয়ে আলোচনা চলছে, এবং আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে এসব শর্ত মেনে তালিকা পাঠানোর জন্য রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো প্রস্তুত হচ্ছে। তবে, শর্তগুলোর বাস্তবায়ন সবার পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে, যা আবারও পুরোনো সিন্ডিকেটের বিরোধিতা ও অবৈধ কার্যক্রমকে বৈধ করার সুযোগ তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।
সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন