জাতীয় ডেস্ক
রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া আলোচিত ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত মূলহোতাসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী। শুক্রবার দিবাগত রাতে বসিলা ফিউচার সিটি এলাকায় বসিলা আর্মি ক্যাম্পের সদস্যরা অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করেন। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—মূল অভিযুক্ত শাওন (১৯), মহিম আহমেদ (২৪), জুয়েল (২৫) ও আশিব (২৪)।
আর্মি ক্যাম্প সূত্রে জানা গেছে, গত ৬ সেপ্টেম্বর মোহাম্মদপুর এলাকায় এক যুবকের ব্যাগ, ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোন ছিনতাইয়ের ঘটনা সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়ে। পরবর্তীতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং জনমনে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ভিডিও ফুটেজের ভিত্তিতে সম্ভাব্য ছিনতাইকারীদের শনাক্তে সেনাবাহিনী তদন্ত শুরু করে।
তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে জানা যায়, ভিডিওতে দেখা ব্যক্তিরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে। সম্প্রতি তাদের একজন রাজধানীতে ফিরে আসে বলে তথ্য পাওয়া যায়। ওই তথ্যের ভিত্তিতে বসিলা আর্মি ক্যাম্পের সদস্যরা শুক্রবার রাত ১২টা ১৫ মিনিটের দিকে অভিযান পরিচালনা করে প্রথমে তাকে আটক করেন। পরে তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযানে উদ্ধার করা সামুরাই অস্ত্রটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ব্যবহৃত হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে সেনাসূত্র জানিয়েছে।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, “মোহাম্মদপুর এলাকায় কেউ অপরাধ করলে সে আজ হোক বা কাল, আইনের হাত থেকে বাঁচতে পারবে না। সাম্প্রতিক সময়ে এলাকায় সংঘটিত বেশিরভাগ ছিনতাই ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা এখনও পলাতক, তাদেরও শিগগিরই আইনের আওতায় আনা হবে।”
গ্রেপ্তার চারজনকে প্রাথমিক তদন্ত শেষে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ছিনতাই ও অস্ত্র সংক্রান্ত আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, ভাইরাল হওয়া ভিডিওর পর থেকে এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত অপরাধসংক্রান্ত ভিডিওগুলো যাচাই করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এই অভিযানে সেনাবাহিনীর দ্রুত পদক্ষেপ নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তা বিষয়ে আস্থা বাড়াবে বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে, রাজধানীর অন্যান্য এলাকাতেও চলমান ছিনতাই ও অপরাধ দমন কার্যক্রম আরও জোরদার করা হবে।