জাতীয় ডেস্ক
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারসহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে, আর সারা দেশে নির্বাচন নিয়ে এক ধরণের উত্তেজনা বিরাজ করছে।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত ‘নির্বাচনী ইশতেহারে প্রযুক্তির ব্যবহার’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। শফিকুল আলম বলেন, “সারা দেশে নির্বাচনের জোয়ার এসেছে এবং ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন আয়োজনে অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, নির্বাচন পরিচালনায় প্রযুক্তির ব্যবহারের গুরুত্ব এবং আধুনিক পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের সম্ভাবনার কথা। প্রযুক্তির ব্যবহার নির্বাচনের নিরপেক্ষতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এছাড়া, প্রেস সচিব বলেন, “মানুষ সুশাসন চায়, তবে সেটা একদিনে আলোচনা করে বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কার নিয়ে ১০ থেকে ১৫ বছর ধরে আলোচনা চলে, এমন ঘটনা বহু দেশে ঘটেছে। নেপালে এমন সংস্কার করতে ৯ বছর লেগেছে।”
এছাড়া, শফিকুল আলম নারীদের প্রতিনিধিত্ব নিয়ে আলোচিত জুলাই সনদ নিয়ে বিতর্কের বিষয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন। তিনি বলেন, “অনেকে বলার চেষ্টা করেন যে, নারী-শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্ব নেই জুলাই সনদে। তবে রাজনৈতিক দলগুলো কি সব শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্ব করে না? সব কিছুই সনদে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “কর্মসংস্থান তৈরি পরবর্তী সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ হবে। আর এটি আরও কঠিন হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (AI) উন্নতির কারণে। AI এই খাতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।”
শফিকুল আলম উল্লেখ করেন যে, আগামী সরকারকে নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে। বিশেষত, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার যে সব উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, তা আগামী সরকারকে গ্রহণ করে এগিয়ে নিতে হবে। “পাঁচ বিলিয়ন ডলার ইনভেস্ট করা হয়েছে রেল প্রজেক্টে, এবং সব কিছু গোপালগঞ্জে টাচ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে শেখ হাসিনার ‘চোরতন্ত্র’, যা আগামী সরকারকে মোকাবেলা করতে হবে,” বলেন তিনি।
শফিকুল আলম ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক দলগুলোর শক্ত অবস্থান নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শেখ হাসিনার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে স্পষ্ট বক্তব্য দিতে হবে। তিনি আজও বলেছেন, জুলাই আন্দোলনকারী সবাই সন্ত্রাসী। আওয়ামী লীগ ১৮ কোটি মানুষকে সন্ত্রাসী বলে ক্ষমতায় আসতে চায় এবং তাদেরকে হত্যাযজ্ঞের জন্য উস্কানি দিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোকে এই বিষয়ে শক্ত অবস্থান নিতে হবে।”
ফেব্রুয়ারিতে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টা ও সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর পরিশ্রমের কথা জানানোর পর, দেশব্যাপী নির্বাচনের প্রস্তুতির মধ্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে প্রতিশ্রুতি থাকা সত্ত্বেও, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র বিতর্ক এবং নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।