নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা: পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, তার স্ত্রী সৈয়দা আরজুমান বানু এবং মেয়ে এস আমরীন রাখীর নামে থাকা ৫৭টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত। এসব হিসাবের মোট ২ কোটি ৮৯ লাখ টাকা রয়েছে।
আজ (সোমবার) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক শিহাবুল ইসলাম দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রিয়াজ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
দুদকের আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, জাহাঙ্গীর কবির নানক, তার স্ত্রী ও মেয়ে এবং স্ত্রীর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমএস ডন অ্যাডভারটাইজিংয়ের নামে থাকা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে ৩২ কোটি ১৮ লাখ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন ঘটেছে। এর মধ্যে চলতি হিসাব, সঞ্চয়ী হিসাব, এফডিআরসহ বিভিন্ন ধরনের হিসাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
দুদক সূত্রে জানানো হয়, তদন্তকালে এসব ব্যাংক হিসাবের মধ্যে অর্থ বেহাত করার চেষ্টা হতে পারে, এমন অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে। এই পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাবগুলো দ্রুত ফ্রিজ করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন করা হয়। আদালত অভিযোগের সুষ্ঠু অনুসন্ধান ও তদন্তের স্বার্থে এসব হিসাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের নির্দেশ দেন।
এছাড়া, আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, নানক ও তার পরিবারের সদস্যরা অস্পষ্ট ও সন্দেহজনকভাবে বড় অঙ্কের টাকা লেনদেন করেছেন, যা আইনগতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। এর ফলে তাদের বিরুদ্ধে আরো গভীর অনুসন্ধান চালানোর প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।
এদিকে, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও তার পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে এখনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে, দুদক এই সিদ্ধান্তকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে উল্লেখ করেছে, যা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থানকে আরও দৃঢ় করে।
আদালতের নির্দেশের পর, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোকে এসব হিসাব বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বাস্তবায়ন করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে।
এ ঘটনাটি দেশের রাজনৈতিক এবং প্রশাসনিক অঙ্গনে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে সরকার ও বিরোধী দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এর সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে আলোচনা চলছে।