আইন আদালত ডেস্ক
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ মীর মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বলেছেন, শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর না হলে এই রায়ের কোনো মূল্য থাকবে না। তিনি অভিযুক্তদের দেশে ফিরিয়ে এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে রায় কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় ঘোষণার পর আদালত প্রাঙ্গণ থেকে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন। তার ভাষায়, “যদি ফাঁসি কার্যকর না হয়, তাহলে আওয়ামী দোসররা তাদের প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাবে। সুতরাং যত দ্রুত সম্ভব শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান কামালকে দেশে ফিরিয়ে এনে রায় কার্যকর করা হোক।”
মীর মাহবুবুর রহমান বলেন, “ভারতের কাছে আমাদের বার্তা থাকবে, একজন খুনি ও ফ্যাসিস্টকে নিজেদের কাছে আশ্রয় না দিয়ে তাকে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিন। দেশের মানুষই তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরও জানান, শহীদ পরিবারগুলো সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মামুনের বিরুদ্ধে ঘোষিত পাঁচ বছরের সাজায় অসন্তুষ্ট। তার ভাষায়, “যদিও মামুন রাষ্ট্রের সাক্ষী ছিল, তারপরও তার শাস্তি আরও কঠোর হওয়া উচিত ছিল। আমরা মনে করি, তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হওয়া প্রয়োজন ছিল। যদি উচ্চ আদালতে আপিলের সুযোগ থাকে, আমরা তা করব।”
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সোমবার শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের মৃত্যুদণ্ডাদেশ ঘোষণা করে। একই মামলায় সাবেক আইজিপি মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আদালত রায়ে উল্লেখ করে, অভিযুক্তরা মানবতাবিরোধী অপরাধের পরিকল্পনা, নির্দেশ ও বাস্তবায়নে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন।
রায়ের পর আদালত প্রাঙ্গণে শহীদ পরিবারের সদস্য ও গণঅভ্যুত্থানে আহত ব্যক্তিরা উপস্থিত হয়ে ন্যায়বিচারের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। তাঁদের মতে, দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এই রায় ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে থাকবে, তবে প্রকৃত ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে তখনই, যখন দণ্ডপ্রাপ্তদের দেশে ফিরিয়ে এনে রায় বাস্তবায়ন করা হবে।