দেশমিডিয়া ডেস্ক
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি দেশের গণমাধ্যমকে দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের বক্তব্য প্রচার না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এ পদক্ষেপ গ্রহণের কারণ হিসেবে এজেন্সি উল্লেখ করেছে, এসব বক্তব্য সামাজিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত করতে পারে এবং সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা ও অপরাধমূলক কার্যকলাপের আহ্বান বা নির্দেশনা বহন করে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মুহম্মদ জসীম উদ্দিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছেন। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশের কিছু প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম এবং নিউজ পোর্টাল দণ্ডপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামিদের বক্তব্য সম্প্রচার করছে, যা জাতিসংঘের সুপারিশকৃত সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং জনশৃঙ্খলার রক্ষার মানদণ্ডের পরিপন্থী।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি জানিয়েছে, দণ্ডপ্রাপ্ত বা পলাতক আসামিদের বক্তব্য প্রচার করা “সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫”-এর নিয়মাবলীর লঙ্ঘন। বিশেষত, অধ্যাদেশের ধারা ৮(২) অনুযায়ী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য, যা দেশের অখণ্ডতা, নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করে, জাতিগত বা ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়ায় অথবা সহিংসতার আহ্বান জানায়, তা অপসারণ বা ব্লক করার জন্য ব্যবস্থা নিতে পারে।
অধ্যাদেশের ধারা ২৬(১) অনুযায়ী, “ছদ্ম পরিচয়” বা অবৈধ প্রবেশের মাধ্যমে ঘৃণা, জাতিগত বিদ্বেষ বা সহিংসতা প্ররোচনাকারী বক্তব্য প্রকাশ বা প্রচার করা অপরাধ এবং দণ্ডনীয়। একই ধারার ২৬(২) অনুযায়ী, এ ধরনের অপরাধীদের সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড এবং/অথবা সর্বোচ্চ দশ লাখ টাকা জরিমানা আরোপ করা যেতে পারে।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি নিশ্চিত করেছে যে, তারা সাংবাদিকতা ও ব্যক্তির স্বাধীনতাকে সম্মান করে। তবে এজেন্সি পুনরায় গণমাধ্যমকে অনুরোধ করেছে, দণ্ডপ্রাপ্ত বা পলাতক আসামিদের সহিংস, বিশৃঙ্খলাপূর্ণ, অপরাধমূলক বা উসকানিমূলক কোনো বক্তব্য প্রচার থেকে বিরত থাকতে এবং আইনি দায়বদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনায় রাখতে।
বিশ্লেষকদের মতে, এ পদক্ষেপ দেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি এটি অনলাইনে দণ্ডপ্রাপ্ত বা পলাতক অপরাধীদের প্রভাব সীমিত করার এবং গণমাধ্যমকে দায়িত্বশীলভাবে তথ্য পরিবেশন নিশ্চিত করার লক্ষ্যেও সহায়ক হবে।
দেশের সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে এ ধরনের উদ্যোগ সামাজিক ভারসাম্য রক্ষায় এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সহিংস বা অবৈধ কনটেন্টের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।