নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা: চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে ৬৭৮ কোটি ১৯ লাখ ১৪ হাজার ১৪ টাকা অবৈধভাবে অর্জনের প্রাথমিক তথ্য প্রমাণ পাওয়ায় ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মালিক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানিয়েছেন, গত ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে সিআইডি ঢাকার ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের আর্থিক লেনদেন, নথিপত্র এবং ব্যাংক হিসাব পর্যালোচনা করে অনুসন্ধান শুরু করে। তদন্তে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি স্থানীয় বাজার থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছে। প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে ১৭ নভেম্বর দিলীপ কুমার আগরওয়ালার বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অসীম উদ্দিন খান জানান, দিলীপ কুমার আগরওয়ালা (৫৭) ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড এবং ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে দেশে এবং বিদেশে স্বর্ণ ও হীরার ব্যবসা পরিচালনার আড়ালে অর্থ পাচার ও চোরাকারবারি পরিচালনা করে আসছিলেন।
তদন্তে আরও প্রকাশ পেয়েছে, প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এলসির মাধ্যমে বিদেশ থেকে বৈধভাবে মোট ৩৮ কোটি ৪৭ লাখ ৪৮ হাজার ১১ টাকা ৫২ পয়সা মূল্যের স্বর্ণবার, অলংকার, লুজ ডায়মন্ড এবং অন্যান্য দ্রব্য আমদানি করেছে। একই সময়ে স্থানীয় বাজার থেকে কেনা বা বিনিময় পদ্ধতিতে মোট ৬৭৮ কোটি ১৯ লাখ ১৪ হাজার ১৪ টাকার স্বর্ণ ও হীরা সংগ্রহ করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটি সিআইডিকে এ সম্পর্কিত উৎস বা সরবরাহকারী সংক্রান্ত বৈধ নথি দেখাতে ব্যর্থ হয়। এর ফলে এসব বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ও হীরা চোরাচালানের মাধ্যমে দেশে আনা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে।
সিআইডির মুখপাত্র জানান, চোরাচালানের মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ ও অপরাধলব্ধ অর্থ রূপান্তর, হস্তান্তর বা ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্য ও নথিপত্র পর্যবেক্ষণে মানিলন্ডারিংয়ের প্রাথমিক সত্যতা প্রতীয়মান হলে অনুসন্ধান প্রতিবেদন সিআইডির অতিরিক্ত আইজিপির কাছে দাখিল করা হয়। ১৬ নভেম্বর সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট মামলা দায়েরের অনুমোদন পেয়েছে।
তিনি আরও জানান, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড ও ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় দায়ের করা মানিলন্ডারিং মামলা সিআইডির তফসিলভুক্ত হওয়ায় এর তদন্ত সিআইডিই পরিচালনা করবে। প্রতিষ্ঠানটির নথি, ব্যাংক লেনদেন এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের তথ্য যাচাই করে আইনানুযায়ী নিবিড় তদন্ত করা হবে।